২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩:১০
শিরোনাম :
শিরোনাম :
গ্রীষ্মের তীব্র গরম কথন অমর একুশে বইমেলায় মনোয়ার মোকাররমের “আগামী বসন্তে” আজ বঙ্গবন্ধু গবেষক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এপার-ওপার বাংলার লেখকগণ জবিতে ‘মধুসূদন ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎবঙ্গ, বাংলার লোককৃষ্টির যুক্ত সাধনার ঐতিহ্য আলোচনা সভার প্রধান আলোচক মিল্টন বিশ্বাস স্বর্ণপদক পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক নাসরীন জেবিন যারা কবিতা ভালোবাসে তারা স্বচ্ছ মানসিকতার হয় : কবি কামাল চৌধুরী ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত
নোটিশ :
Wellcome to our website...

বাঙালি ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ

রিপোর্টার
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৩:১০ অপরাহ্ন

ফাইজুল হক নোমান

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদ এর প্রবক্তা। তবু কেউ কেউ প্রশ্ন করেন তাদের জাতীয়তা কী.. বাঙালি না বাংলাদেশী?

পাকিস্তানিরা বলত ওরা খায় ভাত, খর্বাকার আর পরে লুঙ্গি। কথা গুলো তুচ্ছ করে বলতো। তবে একথাগুলোর দ্বারা আমাদের জাতীয়তা দারুনভাবে ফুটে উঠতো। যা ছিল বঙ্গবন্ধু গর্বের বস্তু। ওরা আমাদের দেশের মাটি চাইত তবে এদেশের সংস্কৃতি তথা খর্বাকৃতির মানুষগুলোকে চাইতো না। এখান থেকেই বৈষম্যের শুরু। শিক্ষা,  চিকিৎসা, প্রযুক্তি, ভাষা, রাজনীতি সর্বত্র অবহেলার স্বীকার।

বাঙালি আর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ- দুটোতেই অনেকে যুক্তি দেন। তবে এতটুকুই  মনে হলো নতুন করে ভাবা দরকার।  সংশোধন দরকার।  নাগরিকত্ব আর জাতীয়তাকে আরো পৃথকভাবে দেখা দরকার। জাতীয়তাকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা দরকার।

একাত্তরে শুধু ভাষা দ্বারা জাতীয়তাবাদ নির্ণয় করা হয়েছিল। সেসময় সংস্কৃতিকেও ধারণ করতে হয়েছিল। কেউ একই সংস্কৃতির একই ভূখণ্ডের, তবে শুধু  ভিন্নভাষী হলেই  কি তাকে ভিন্ন জাতীয়তাবাদের বলা যাবে?.. আবার কারো মাতৃভাষা বাংলা  হলেই তাকে বাঙালি বলতে পারি।

তবে সে যদি ভিন্ন সংস্কৃতি লালন করে বা ভিনদেশী হয়, তার জাতীয়তা কি হবে?.. 

পশ্চিম বঙ্গের জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা বাংলা হলেও  তাদের জাতীয়তা ভারতীয়। কি আজব! 

পোশাক পরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, চলন-বলন, উৎসব অভিন্ন হলেও রাষ্ট্রীয় সীমারেখার কারনে তারা ভারতীয়। 

সিটিজেনশিপ বা নাগরিকত্ব ভারতীয় হলেও জাতীয়তা ভারতীয় হতে পারে কি? তারাও বাঙালি। 

স্কটিশ, আইরিশ,  ইংরেজ সবাই ব্রিটিশ নাগরিক। তাদের ভাষাও এক। তবে সংস্কৃতিগত কারণে তাদের জাতীয়তাবাদ ভিন্ন।

কেউ এদেশে জন্মগ্রহণ না করে ও আইনি ভাবে নাগরিকত্ব নিতে পারেন। তবে সে বাঙালি হয়ে যাবেন না। নাগরিকত্ব সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আইনগত ভাবে যেকোন সময় একজনের নাগরিকত্ব তার জন্মভূমিতে ও বাতিল হতে পারে। আবার কেউ অন্য কোন দেশের নাগরিক ও হয়ে যেতে পারেন। তবে ইচ্ছে করলেই জাতীয়তা বদলানো যায় না। 

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের নাগরিকত্ব বাতিল করা সম্ভব হলেও তারা অবাঙালি হয়ে যাবে না। এ জাতির কলঙ্ক হিসেবে তারা অনন্তকাল চিহ্নিত হয়ে থাকবে। 

বাঙালি জাতীয়তাবাদ কোন আইনি বিষয় নয়। এটা যুগ যুগ ধরে চর্চার বিষয়।  আইন করে কারো জাতীয়তা রহিত করা যায় না। কারণ জাতীয়তাবাদ এক দিনে গড়ে ওঠে না বা ধ্বংস হয় না। এটা বিবর্তনের মাধ্যমে গড়ে ওঠে। 

ভাবাবেগ,  সংস্কৃতি,  ভাষা, বলন, চলন, খাদ্যাভ্যাস, জীবনের ছন্দ প্রভৃতি দ্বারা জাতীয়তাবাদ নিয়ন্ত্রিত হয়। কোন রাষ্ট্রীয় কাঠামো দ্বারা নয়।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক রাষ্ট্র জাতীয়তাবাদ চাপিয়ে দেয় বা ভুল করে নাগরিকত্বের সাথে গুলিয়ে ফেলে। আমাদের জাতীয়তা কোন অর্থে বাংলাদেশী আবার সব ভারতের নাগরিকরা কোন অর্থে ভারতীয় তা আমার জানি। 

সংবিধান অনুসারে জাতি বাঙালি আর আমাদের জাতীয়তা বাংলাদেশী।বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। শুধু একটি নতুন ভূখণ্ডের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল।

ভাষা, খাদ্য, চালচলন, পোশাকপরিচ্ছদ,  সংস্কৃতি, দৈহিক গড়ন প্রভৃতি কারণেও পাকিস্তানিদের কম টিটকারি সহ্য করতে হয়নি। তবে আজ সংবিধান অনুসারে আমাদের জাতীয়তা ঠিক করতে পারি। 

আমরা লিখি জাতীয়তা – বাংলাদেশী।

ফাইজুলহক নোমান

শিক্ষার্থী 

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ,

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর