ভার্সিটি প্রতিনিধি
বন্ধ মেসে রেখে আসা বই-খাতাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে এসে লাশ হয়ে ফিরে গেলেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ছাত্রী অর্পিতা সাহা। আজ ১৭ মে রোববার সকাল সোয়া ৯টার দিকে বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে ট্রাকের চাপায় প্রাণ যায় অটোরিকশার যাত্রী অর্পিতার। ওই একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান অটোরিকশার আরেক যাত্রী শেরপুর উপজেলার শেরুয়া কানাইকান্দো গ্রামের সুলতান আহমেদের স্ত্রী নীলা পারভিন নামে আরও এক গৃহবধূ।
হাইওয়ে পুলিশের শেরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর আশরাফুল ইসলাম জানান, সকাল সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার শেরুয়া কৃষ্ণপুর যমুনাপাড়া এলাকায় ট্রাকগামী একটি ট্রাক বগুড়ার দিকে আসা সিএনজি চালিত একটি অটোরিকশাকে চাপা দিলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ট্রাক চাপায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সিএনজি চালিত অটোরিকশার যাত্রী নীলা পারভিন নিহত হন। আহত হন ভেতরে থাকা তিন যাত্রী।
শেরপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রতন হোসেন জানান, আহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে শজিমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর পরই চিকিৎসকরা অর্পিতা সাহাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত কলেজ ছাত্রী অর্পিতা সাহা বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের অদূরে সেউজগাড়ি পালপাড়া এলাকায় ‘ইসলাম মঞ্জিল’ নামে একটি মেসে থেকে পড়ালেখা করতেন বলে জানিয়েছেন ওই একই মেসের ছাত্রী দিথী রাণী। বর্তমানে বাড়িতে অবস্থানরত দিথী রাণী জানায়, অর্পিতার বাড়ি ধুনট উপজেলার মথুরাপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের জীবন সাহার মেয়ে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১৯ মার্চ মেস বন্ধ ঘোষণার পর সব শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যান। তিনি বলেন, ‘সকালে অন্য এক সহপাঠীর মাধ্যমে অর্পিতা সাহার মৃত্যুর খবর পাই। অর্পিতা গতকাল (শনিবার) ম্যাসেঞ্জারে জানিয়েছিল মেস থেকে বই-খাতাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে আজ (রোববার) বগুড়া আসবেন। কিন্তু তার আগেই তিনি লাশ হয়ে গেলেন। এটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’
বগুড়ায় হাইওয়ে পুলিশের শেরপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর আশরাফুল ইসলাম জানান, চালক-ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনা মামলা হবে।