জবি করেসপন্ডেন্ট
রাজধানীতে অবস্থান করা সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী গ্রামে পৌছে দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়(জবি) প্রশাসন । সবার সহযোগীতায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাসায় পৌছে দিতে পারায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমদাদুল হক বলেন, আমাদের শিক্ষকরা, প্রক্টরিয়াল টিম, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দিনরাত পরিশ্রম করে এই কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছেন । তারা ছুটির দিনও কাজ করেছেন । শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করা, রাসের রুট ঠিক করা, বাসের দায়িত্ব দেওয়া , প্রতিনিধি ঠিক করা এসব কিছু তারা করেছে । আমার প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীকে বাসায় পৌছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম এবং খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছি । সোমবার(১৯ জুলাই) রাতে মুঠোফোনে সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন ।
তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এই সংকট তৈরি না হলে শিক্ষার্থীদের পৌছে দেওয়ার চিন্তা আমাদের করতে হতো না । সামনে ঈদ এবং এখন করোনাকালীন কঠিন সময় । এসময় এমনিতে গনপরিবহনের টিকেট পাওয়া যায় না । আবার করোনা ভাইরাসের কারণে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গনপরিবহন চলছে । ইচ্ছে করলেও অনেক শিক্ষার্থী যেতে পারত না । আবার রাস্তায় প্রচুর জ্যাম । এসব বিবেচনা করেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।
উপাচার্য আরো বলেন, গত তিন দিনে আমরা ঢাকায় অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের বাসায় পৌছায় দিতে সক্ষম হয়েছি । নিজেদের গাড়িতে শিক্ষার্থীরা গেছে তাই কষ্ট হলেও তাদের কষ্ট মনে হয় না । এখন তারা বাসায় অবস্থান করেছেন ।
এসময় উপাচার্য গ্রামে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গ্রামে অবস্থান করলেও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে । উৎসব অবশ্যই করবো তবে নিজেদের নিরাপদ রেখে করবো । গ্রামে শিক্ষার্থীদের আইসোলেশনে থাকতে হবে । আইসোলেশন ইজ দ্যা বেস্ট সলিউশন । আইসোলেশনে না থেকে সবার সাথে মেলা-মেশা করলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায় । আমাদের পাশের জনকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত করলে অনেক সমস্যা হতে পারে ।
তিনি করোনা ভাইরাসকে অদৃশ্য শত্রু উল্লেখ্য করে বলেন,করোনা ভাইরাসকে চোখ দিয়ে দেখার সুযোগ নাই । অদৃশ্য একটা বস্তু আমাদের অসুস্থ করে দিচ্ছে । আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেদের নিরাপদ রাখি এবং অন্যকেও নিরাপদ রাখি । যেহেতু তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী , তোমাদের দেখে অন্যরা উদ্ভুদ্ধ হবে । আমাদের সুস্থভাবে বাঁচার একটাই উপায় স্বাস্থ্যবিধী মেন চলা । যখনেই বাইরে যাও , মাস্ক অবশ্যই পরিধান করো ।
উপাচার্য ইমদাদুল হক আরো বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের জন্যই । শিক্ষার্থীদের ছাড়া আমাদের দামও নাই, মূল্যও নাই , কাজও নাই । শিক্ষার্থীরা ভালো না থাকতে পারলে আমরা ভালো থেকে কি করবো । আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাসায় পৌছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম যেন তারা কারো সংস্পর্শে না যায় । শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাসায় পৌছে দিতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা ।
উল্লেখ্য, চলমান করোনা মহামারির মধ্যে আসন্ন ঈদুল-আজাহায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে গ্রামে পৌঁছে দিতে প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের বাসায় যাওয়ার জন্য আবেদন করার আহ্বান করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ১৩ তারিখ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ৬০০ জন শিক্ষার্থীর আবেদন জমা হয়েছিল।
শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেশাসন নিজস্ব পরিবহন ছাড়াও বিআরটিসির বাস ভাড়া করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত শনিবার রাজশাহী, সিলেট এবং রংপুর বিভাগে; গতকাল রোববার বরিশাল ও খুলনা বিভাগে এবং আজ সোমবার ময়মনসিংহ ও চট্রগ্রাম বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।