। হাসান মেহেদী।
প্রাণঘাতী করোনার (কোভিড-১৯)কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ঘোষণা করা হয়েছিলো। সেটা প্রায় এক বছর হতে চলেছে।
পরবর্তীতে বাড়ানো হয়েছে এ ছুটি। মাঝখানে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য জাতীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণাও করা হয়। শেষ অব্দি লকডাউন পরিস্থিতি শিথিল ও অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে গেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি কিন্তু ধাপে ধাপে বেড়েই চলেছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আভাস পাওয়া গেলেও তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবের আলো দেখেনি। তার বদলে আবারও ছুটি বাড়ানো হয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু কওমি মাদরাসাগুলোকে ছুটির আমতামুক্ত রাখা হয়েছে ।
বর্তমানে সব ধরনের শিল্পকারখানা, অফিসআদালত, গণপরিবহন পুরোপুরি চালু রয়েছে। খুলে দেওয়া হয়েছে মার্কেট, শপিংমল, কমিউনিটি সেন্টারগুলোও।
এমনকি আয়োজন করা হয়েছে সিটি করপোরেশন, উপজেলাসহ স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের। ধর্মীয় গণজমায়েতগুলোও থেমে নেই। বর্তমানে বাস্তবিক পক্ষে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই কেবল বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার জন্য শিক্ষকসমাজের অনেকেই আদালতের দারস্থও হয়েছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষকসমাজের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) ‘র কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত প্রচারপত্রেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও দিনশেষে শিক্ষার্থীদের তো পিতামাতা বা পরিবারের অন্য সদস্য যাঁরা অফিস-আদালতে কাজ করছেন বা অন্য জরুরি কাজে বাইরে যাচ্ছেন তাঁদের সাথে মিশতে হচ্ছে। অথবা যে কওমি মাদরাসাগুলোকে ছুটির আওতায় আনা হয়নি, তাঁদের সাথেও কোন না কোনভাবে মিশতে হচ্ছে মূলধারার শিক্ষার্থীদের। তাহলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রেখে আদতে কি কোন লাভ হচ্ছে?
একজন শিক্ষক একইসাথে একজন অভিভাবক হিসেবেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে বলে মনে করি।
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, প্রভাষক