বরগুনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অমর চন্দ্রের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার ছাড়ানোর অভিযোগ এনামুল নামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী ‘এনামুল’র নামে এ অভিযোগ তুলেন। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এনামুল হকের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার- ১৬২১০০৭৫৭৩১ ।
বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার অত্যন্ত ভালো মানুষ, স্যারের সাথে যেসব অভিযোগ তুলা হয়েছে তা সবই মিথ্যা ও বানোয়াট। এনামুল নামের ছেলেটা স্যারকে নিয়ে যেসব কটুকথা বলে বেড়াচ্ছে, যেভাবে স্যারকে অপমান করার চেষ্টা অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছেন – আমরা, বাংলা বিভাগের সকল শিক্ষার্থী তার জন্য প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বরগুনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আদিবা তার ফেসবুকে পোস্টে বলেন, “সাথে বহু বছর ধরে যার নাম জড়িয়ে আছে, সে হলো শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক ” অমর চন্দ্র দাস”।
আমরা যারা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তারা জানি, আমাদের বিভাগেরর জন্য স্যার কীভাবে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে একটু একটু করে শিক্ষার্থী & কলেজে সুনাম অর্জনের চেষ্টা করছেন। চতুর্থ বর্ষের ” এনামুল ” ভাই, স্যারকে নিয়ে যেসব কটুকথা বলে বেড়াচ্ছেন, যেভাবে স্যারকে অপমান করার চেষ্টা অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছেন – আমরা, বাংলা বিভাগের সকল শিক্ষার্থী তার জন্য প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
একটা সময় “এনামুল ” ভাই ও স্যারে মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল, সে স্যারকে বিভিন্ন ভাবে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করতেন ‘ ইনকোর্স ‘ মার্ক ভালো পাওয়ার জন্য। ” এনামুল ” ভাই তখনই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে স্যারের নিন্দে মন্দ করতে, যখন স্যার তাকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী ‘ চতুর্থ বর্ষের ভাইবায় ‘ মার্ক দিলেন।
একের পর এক সাবজেক্টে ফেইল করে, ভাইবায় ‘এ প্লাস’ দাবি করে এবং স্যার তা না দেয়ায় স্যারকে অপদস্ত করতে- মেয়েলি সংক্রান্ত কথা তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। অথচ আমাদের স্যার কোনো মেয়েকে আজ পর্যন্ত ” মা” ছাড়া অন্য কোনো নামে সম্বোধন করেনি। স্যার তার আশীর্বাদের হাত যে স্টুডেন্ট এর মাথায় রাখেনি সে নিতান্তই দুর্ভাগা ; ( সেই স্টুডেন্ট ছেলে এবং মেয়ে উভয়ই)।
একজন নীতিবান শিক্ষককে দুর্নীতি করতে বাধ্য করার প্রচেষ্টা যেন এই সমাজে আর কেউ করার সাহস না পায়,এইটুকুই আমাদের চাওয়া। একজন শিক্ষকের অপমান মানেই এই সমাজের প্রতিটি মানুষের অপমান।কাজেই আসুন, আমরা সবাই মিলে এর প্রতিবাদ জানাই।”
আয়শা রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “এই রেজাল্ট নিয়ে এ প্লাস দাবি করা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই না। এনামুল কে বলতে চাই ঘাটের কাছে গিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ করলেও ওই ধাক্কায় তীরে পৌছানো যায় কিন্তু ইঞ্জিন চালু না করে কখনো তীরে ওঠা যায় না কাজেই স্যার ভাইবায় এ প্লাস দিলেই অন্য বিষয়ে পাশ হয়ে যেত না। স্যার কে দোষারোপ করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করো তুমি নিজে কি আসলেই এ প্লাস পাওয়ার যোগ্য?? স্যার কে দুই দিন খাইয়ে এ প্লাস নিয়ে যাবে তাহলে যারা চারটা বছর খেটে ফাস্ট ক্লাস পেলো ওরা কি বলবে?? কাউকে মিথ্যে অপবাদ দিতে নেই অন্যের দিকে একটি আঙ্গুল তুললে নিজের দিকে চারটি থাকে।”
বাংলা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ টিপু বলেন, “আমার চোখে দেখা স্যার একজন সৎ মানুষ। আমাদের বাংলা বিভাগের জন্য গৌরব ও সে, আর স্যার তো মেয়েদের মা বলে ডাকে এবং ছেলেদের বাবা বলে ডাকে আমাদের তার নিজের সন্তানের মতো বোঝে, আর ভাইভা যদি কোনো ছাত্র ছাত্রী ভালো না করে সেখানে স্যার অবৈধভাবে নম্বর দিবেন ই বা কেনো, তাই স্যারের নামে এ মিথ্যা অপবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
উল্লেখ্য , গত বুধবার (৬ এপ্রিল) ওই কলেজের বাংলা বিভাগের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র এনামুল হক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অমর চন্দ্র বলেন, এ সবই মিথ্যে অভিযোগ। অনিয়মিত কিছু ছাত্র ভাইভা ও ইনকোর্সে ফুল মার্কস দেওয়ার জন্য আমায় চাপ প্রয়োগ করেছিল। কিন্তু ফলাফল অনুসারে আমি মার্কস দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে বিষোদগার করছে। আমি বিষয়টি অধ্যক্ষ স্যারকে জানিয়েছি।
অভিযোগে উল্লেখ্য করেন, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অমর চন্দ্রের হাতে ইনকোর্স ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর থাকায় তিনি শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষ ও প্রাইভেটে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি এবং ছাত্রদের দিয়ে নিজের বাসার বাজার করিয়ে নেন।