১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, রাত ৪:১৭
শিরোনাম :
শিরোনাম :
অমর একুশে বইমেলায় মনোয়ার মোকাররমের “আগামী বসন্তে” আজ বঙ্গবন্ধু গবেষক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এপার-ওপার বাংলার লেখকগণ জবিতে ‘মধুসূদন ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎবঙ্গ, বাংলার লোককৃষ্টির যুক্ত সাধনার ঐতিহ্য আলোচনা সভার প্রধান আলোচক মিল্টন বিশ্বাস স্বর্ণপদক পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক নাসরীন জেবিন যারা কবিতা ভালোবাসে তারা স্বচ্ছ মানসিকতার হয় : কবি কামাল চৌধুরী ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত ‘‘সাহিত্যে দুই মহামানব : গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু’’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রটি অনুষ্ঠিত
নোটিশ :
Wellcome to our website...

ওমিক্রন; আবার কি স্কুল বন্ধ হবে?

রিপোর্টার
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন

সজীব ওয়াফি

করোনা ভাইরাসের নতুন একটি ধরন সনাক্ত হয়েছে বেশ কিছুদিন হলো। যার বৈজ্ঞানিক নাম বি.১.১.৫২৯। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব। নানা নিষেধাজ্ঞা এবং সতর্কতা জারি হয়েছে উন্নত রাষ্ট্রগুলোয়। সংক্রমিত হচ্ছে আগের চেয়েও বেশি হারে। দক্ষিণ আফ্রিকার একটি প্রদেশে করোনার জিনগত মিউটেশনে বিশ্বজুড়ে নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে এমন শঙ্কাময় পরিস্থিতি। বেশ কিছুদিন হলো বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জারি করেছে ১৫ দফা সতর্কতা। সরকার বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে জানুয়ারি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্ধিত সময়। জানানো হয়েছে– মার্চ থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পুরোপুরি হবে কিনা সেটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর। গণপরিবহন, হাট-বাজার ও রাস্তাঘাটসহ ঘরের বাইরে বের হলেই স্বাস্থ্যবিধি পালনের জোর তাগিদ দেওয়া হলেও কারো কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। অনিহা-অনাগ্রহে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়া এই গৌরচন্দ্রিকার কারন।

গত বছরের শুরুর দিকে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বের নানা প্রান্তে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়। আহ্বান জানানো হয় সামাজিক দূরত্বের। বাধ্যতামূলকভাবে এ ভূখন্ডেও অচল পরিস্থিতি বরণ করেছিলো। কলকারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি কোম্পানির ছাটাইয়ের কবলে পড়ে বেকারত্বের মুখোমুখি দাড়িয়েছিল অসংখ্য মানুষ। বন্ধ ছিল রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ। বিদেশ ফেরত অনেক প্রবাসী আর ফিরে যেতে পারেনি। চাপে-বিপাকে, উৎপাদন সংকটে নানান জটিলতা আছড়ে পরে দ্রব্যমূল্যের উপর। সংকটকালীন এই সময়ে প্রবাসীদের সঞ্চয় রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতি সামাল দিয়েছে। জনজীবনে হা-পিত্যেশ উঠেছিল– কবে সবকিছু আবার স্বাভাবিক হবে? করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শেষে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের ভেতর দিয়ে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছিলো। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো অর্থনীতি। যদিও ততদিনে আমাদের অপূরনীয় ক্ষতি হয়ে গেছে!

অতিমারীকালীন সময়ে জোর দেওয়া হয়েছে অনলাইন শিক্ষণ কার্যক্রম। শহরের এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের আওতায় আসলেও সক্ষমতা ছিলো না প্রান্তিক পর্যায়ে। পরিণামে শহর এবং গ্রামের ভিতরে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বৈষম্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরে বাস্তবে দেখা গেল– নীতি নির্ধারকদের ভুলের মাশুল দিতে ভুক্তভোগী হয়েছে গরিব পরিবারগুলো। ঝরে পড়েছে গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে পড়াশোনার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আগ্রহ হারিয়েছে কেউ কেউ। মেয়েরা শিকার হয়েছে বাল্যবিবাহের। গণমাধ্যম মারফত প্রকাশিত হলো বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো কেউ ছিল না।

করোনা প্রতিরোধ করতে আগে ভ্যাকসিন পেয়েছে উন্নত দেশগুলো। এমনকি কিছুসংখ্যক রাষ্ট্রে ইতোমধ্যে বুস্টার ডোজ দেওয়া শেষ। যেখানে অনুন্নত দরিদ্র্য রাষ্ট্রগুলো প্রথম ডোজ দেওয়াই এখনো শেষ করতে পারেনি। তাহলে দারিদ্র্য দেশগুলোকে পিছনে ফেলে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো নিজেরা ভ্যাক্সিন নিশ্চিত করে ঝুঁকিমুক্ত হতে পারল? পারল না, বরং স্পষ্ট হয়ে উঠল– পিছিয়ে পড়া দারিদ্র্য ঐ সকল দেশ থেকেই বারবার মিউটেশন হচ্ছে, অতঃপর পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে এবং আগের টিকা অকার্যকর। এতেই প্রমাণিত হয় সামষ্টিক লড়াই ছাড়া করোনা ভাইরাস অপ্রতিরোধ্য।

পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বন্ধ আছে ভারতে আমাদের গা-ঘেঁষা রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সারাবিশ্বে সব মিলিয়ে ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৪৫টির অধিক দেশ। অসহায় হয়ে পড়েছে সেখানকার নাগরিকেরা। ওমিক্রন ধরা পড়েছে বাংলাদেশেও। বর্তমানে একদিনে আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় পাঁচশ’র কাছাকাছি মানুষ। অথচ ব্যক্তি পর্যায়ে আমাদের কোন খেয়াল নেই, উদ্বেগ নেই। যে যার মতো লাগামছাড়া। এরকম খাপছাড়া পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রক্ষায় হয়তো আবার স্কুল কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্তে আসতে হবে। বিপরীতে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে ন্যায়সঙ্গত কারণেই হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার তুমুল বিরোধিতা। লকডাউনে না গেলেও অর্থনীতি এবার সামাল দেওয়া চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে নিশ্চিত। চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে করোনায় ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থা কাটিয়ে উঠতে। সবক্ষেত্রেই প্রযুক্তির শতভাগ সদ্ব্যবহারের প্রস্তুতি রাখা এখন গুরুত্বপূর্ণ।

করোনা আক্রান্তের পর থেকে অসংখ্য মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ঠেকাতে ঢালাওভাবে নিষেধাজ্ঞা কেবল বিলম্বিত করতে পারবে; কিন্তু প্রান্তিক পর্যায় থেকে নাগরিক সতর্কতা অবলম্বন না করলে ঠেকানো সম্ভব নয়। জীবনের উপর মহামূল্যবান কিছু নাই। সুতরাং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা ছাড়া তখন বিকল্প কোন উপায় থাকবে না। নাগরিক গণসচেতনতা জোরদার করা প্রত্যাশিত। ভবিষ্যৎ সুরক্ষা আমাদের সামষ্টিক আচরণের উপর নির্ভর করছে।

লেখক: প্রাবন্ধিক, ঢাকা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর