ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে উঠবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি নেতা আমিনুল হক। ৮ ফেব্রুয়ারি(২০২৫) শনিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে এক সেমিনারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইসিটি অফিস কম্পাউন্ড সেনপাড়া পর্বতা মিরপুর ১০, ইক্যুমেনিক্যাল খ্রিস্টান ট্রাস্ট (ইসিটি) কর্তৃক আয়োজিত ‘‘সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ নির্মাণে আমাদের করণীয়’’ শীর্ষক এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইক্যুমেনিক্যাল খ্রিস্টান ট্রাস্ট (ইসিটি)-এর চেয়ারম্যান রেভারেন্ড ইম্মানুয়েল মল্লিক।
উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাসির উদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক ইংরেজি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন চেয়ারম্যান, নাট্যকলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, মেজর জ্ঞানেন্দ্র বাড়ৈ, পাস্টর রায়চাঁদ বর্মণ, শাকিল মোল্লা, আহ্বায়ক, যুবদল মিরপুর থানা, সাংবাদিক সুজাউল ইসলাম । সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ইসিটি বোর্ড সদস্য তন্দ্রা রাণী চ্যাটার্জি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইক্যুমেনিক্যাল খ্রিস্টান ট্রাস্ট (ইসিটি)-এর সেক্রেটারি মিল্টন বিশ্বাস । তিনি লিখেছেন- ‘‘একথা আজ সর্বজনবিদিত যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য বিগত শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও খুনের বিচার সম্পন্ন করা বর্তমান সরকার, রাজনীতিবিদ ও জনগণের একটি অঙ্গীকার। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ ধরে সকল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশকে সামনে এগিয়ে নেবার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সেখানে আমাদের করণীয় কি? যেমন ধরুন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষত পুলিশ-র্যাব প্রভৃতি ৫ আগস্টের পর আজ অবধি পরিপূর্ণভাবে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। পক্ষান্তরে সেখানে বাংলাদেশের আস্থা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী জনগণের নিরাপত্তা বিধানে তাদের তৎপরতা দেখিয়ে চলেছেন। প্রশংসা ও গৌরবের জায়গা দখল করলেও সেনাবাহিনী সম্পর্কে ক্রমাগত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করা হচ্ছে। তাদের ধৈর্যকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের দায়িত্ব কি? আমাদের দায়িত্ব ইতিবাচক বাংলাদেশকে তুলে ধরা। এবং সশস্ত্র বাহিনীর অবদানকে স্বীকার করা। আর যারা বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে তাদের সান্নিধ্য বর্জন করা। বরং সত্যকে সত্য বলা, সাদাকে সাদা বলা, নিজে স্বচ্ছ থাকা এবং মানুষে মানুষে ভেদাভেদ না করা এবং অপরাধকে প্রশ্রয় না দেওয়া-প্রভৃতির মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা ।’’
প্রধান অতিথি জননেতা আমিনুল হক বলেন, যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল বাকশালীদের প্রভাবে সেটা পূরণ হয় নাই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অল্প কিছু সময়ের মধ্যে দেশকে কৃষি শিল্প এবং রপ্তানির মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান, স্বৈরাচারী এরশাদ দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়, স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ৫৩ বছরেও পূরণ হয়নি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বিএনপি’র ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীকে হামলা-মামলার শিকার করে এবং দেড় লক্ষ নেতাকে জেলবন্দী করেছিল।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাসেও স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রূপরেখার মধ্যে সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতির কথা বলেছেন, মৌলিক চাহিদার কথা বলেছেন, পরিপূর্ণভাবে স্বৈরাচারমুক্ত না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতি পূর্ণতা পায় না। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা হিন্দু-খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘু মানুষের উপর হামলা করে বিএনপির উপর দোষ দিত ভারতের সুবিধা নেওয়ার জন্য। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় ছিল, স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার পর এখন আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি। আমরা আর সংখ্যালঘু বলতে চাই না । ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
ইসিটির উক্ত সেমিনারে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক ধর্মীয় সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজসেবক উপস্থিত ছিলেন।