জবি করেসপন্ডেন্ট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের(জবি) বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাত আরা সোহেলীর রুম নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে । বর্তমানে জান্নাত আরা সোহেলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন । এদিকে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট ড. মিল্টন বিশ্বাসের রুম সংকুলান না হওয়ার কারণে বিভাগের চেয়ারম্যান ড. পারভীন আক্তার জেমীকে জানিয়ে জান্নাত আরা সোহেলীর রুম পরিষ্কার করে দখল করেন। এসময় বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান পারভীন আক্তার জেমি বিভাগে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায় । বিষয়টি বাংলা বিভাগের কর্মচারীর মাধ্যমে জানতে পেরে সোহেলি জান্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল ও রেজিস্ট্রারকে জানান । বিকেলে প্রক্টরিয়াল বডির সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার রুমের তালা ভেঙে সিলগালা করে দেন। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার(১৯ মার্চ ) সন্ধ্যায় জান্নাত আরা সোহেলি ভিসি বরাবর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন এবং সিভিল আইনের আশ্রয় নিতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন ।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে আন্তঃকোন্দল বেড়েই চলেছে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান করে বাংলা বিভাগের শিক্ষকরা। যখন বিভাগের একদল সহকর্মী ড. মিল্টন বিশ্বাসের সাথে ছিলেন তখন তাঁর প্রশংসা করতেন বলে জানা যায়। বরং তখন জান্নাত আরা সোহেলি অন্য গ্রুপে অবস্থান করায় বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা জান্নাত আরা সোহেলির নামে কটু কথা বলতেন।প্রথম থেকেই মিল্টন বিশ্বাস ও জান্নাত আরা সোহেলির পাশাপশি অফিস রুম। ২০১৩ সাল থেকে জান্নাত আরা সোহেলির কাছ থেকে সাবধানে থাকতে বলেছেন জেমি-চঞ্চল গ্রুপের সিনিয়র শিক্ষকরা । যে কোন সময় মিল্টন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সোহেলি যৌন হয়রানীর অভিযোগ করতে পারেন বলে জানাতেন সিনিয়র সহকর্মীরা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও কর্মচারীদের কাছ থেকে জানা যায়, অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস আচরণে খোলা ও উদার মনের হওয়ার কারণে সবার সাথে সরাসরি কথা বলেন। তার এমন ব্যবহার পছন্দ করেন না বিভাগের অনেক শিক্ষক। সর্বদা তাকে হেনস্থা করার সুযোগ খুঁজেন বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানকে জানিয়ে সহকারী অধ্যাপক জান্নাত আরা সোহেলির রুম পরিষ্কার করে বসার উপযোগী করেন। অথচ বিষয়টিকে ইস্যু করে মিল্টন বিশ্বাসকে হেনস্থা করতে জান্নাত আরা সোহেলিকে ব্যবহার করছেন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী ।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ও আমাকে হেনস্থা করার জন্য জান্নাত আরা সোহেলিকে আমার পাশে রাখতে চাচ্ছেন তারা । এটা তারা ইনটেনশনালি করছেন। রুম দখলের বিষয়ে বলেন, আমি বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে যা করার করেছি । আমি যখন রুম পরিষ্কার করি তখন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন । জান্নাত আরা সোহেলির রুমে ২ বছরের ময়লা আবর্জনায় ভর্তি ছিল । সেখানে তিনটা চেয়ার, একটা টেবিল এবং একটি বই রাখার শেলফ । তিনি আরো বলেন, আমার রুমে অনেক বই নষ্ট হচ্ছে, সেগুলো রাখার জায়গা হয় না । তাই আমি এটা করেছি ।
এদিকে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. পারভীন আক্তার জেমিও ভিসি বরারব লিখিত অভিযোগে এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের পরিপন্থী বলেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বিভাগে অবস্থান করেও কেন রুম দখল করার সময় বাধা দেন নি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খেয়াল করিনি।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাত আরা সোহেলি বলেন, আমি এ বিষয়টি নিয়ে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ভিসি বরাবর অভিযোগ দিয়েছি এবং প্রক্টর স্যার রবিবার ক্যাম্পাসে আসতে বলেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষকদের বিষয় নিয়ে রেজিস্ট্রার স্যারের সাথে যোগাযোগ কর।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি একেবারে বাংলা বিভাগের কোন্দলের ফসল।এ বিষয়টি নিয়ে মিটিং হবে।