২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, রাত ২:৩৬
শিরোনাম :
শিরোনাম :
অমর একুশে বইমেলায় মনোয়ার মোকাররমের “আগামী বসন্তে” আজ বঙ্গবন্ধু গবেষক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এপার-ওপার বাংলার লেখকগণ জবিতে ‘মধুসূদন ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎবঙ্গ, বাংলার লোককৃষ্টির যুক্ত সাধনার ঐতিহ্য আলোচনা সভার প্রধান আলোচক মিল্টন বিশ্বাস স্বর্ণপদক পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক নাসরীন জেবিন যারা কবিতা ভালোবাসে তারা স্বচ্ছ মানসিকতার হয় : কবি কামাল চৌধুরী ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত ‘‘সাহিত্যে দুই মহামানব : গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু’’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রটি অনুষ্ঠিত
নোটিশ :
Wellcome to our website...

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান : জন্মদিনের শুভেচ্ছা

রিপোর্টার
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন

মো. আহসান হাবিব।।

আজ ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের জন্মদিন।

১৯৫৮ সালে কুমিল্লার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ। শিক্ষা, রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি তথা সামগ্রিক ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য দখলদারিত্ব। বিশিষ্ট কলামিস্ট ড. মীজানুর রহমান দেশের জাতীয় পত্র- পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখেন, মিডিয়া পাড়ার জনপ্রিয় মুখ নিয়মিত টকশো করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন। কলাম, টকশোর মাধ্যমে দেশের শিক্ষা, রাজনীতি, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সর্বোপরি সার্বিক দিক চমৎকার ভাবে লিখেন এবং বলেন।

ড. মীজানুর রহমান ১৯৭৩ সালে বিবির বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পাস করে ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হন। একই বিভাগ থেকে স্নাতক ( সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে ব্যবসায় প্রশাসনে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষকতার মত মহান পেশার মাধ্যমেই তাঁর বর্ণিল কর্মজীবনের সূচনা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮২ সালে মার্কেটিং বিভাগে যোগদান করে ১৯৮৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শিক্ষকতাই তিনি এতোটাই জনপ্রিয় যে, তাঁকে দক্ষিণ এশিয়ার মার্কেটিং- এর ফিলিপ কটলার বলে আখ্যায়িত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বও পালন করেছেন। শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান, আইসিএমএ- বাংলাদেশের কাউন্সিল মেম্বার, ম্যাকসন্স স্পিনিং-এর পরিচালক, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ফাইন্যান্স কমিটির সদস্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন।

বর্তমানে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্বরত আছেন। এছাড়াও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য।আইসিবি’র সাবসিডিয়ারি এএমসিএল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ইনডিপেন্ডেন্ট পরিচালক।

তিনি বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহবায়ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগের এলামনাই এসোসিয়েশন এবং মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট।

২০১৩ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির অভূতপূর্ব পরিবর্তন সাধিত করেন। অতীতে পড়ালেখার মান নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন থাকলেও বর্তমানে ড. মীজানুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মেধাবীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্বিতীয় শীর্ষ বিদ্যাপীঠে পরিণত হয়েছে। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর যে অসামান্য অবদান, সেই অবদানের অংশ হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তিগত দিক থেকে সমৃদ্ধ করতে ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য এক মেগা প্রকল্প উপহার দিয়েছেন।সেখানে ভূমি উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। নিয়মিত সভা-সেমিনার, দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ,উন্নত পাঠদান, নিয়মিত ক্লাস- পরীক্ষাসহ সেশনজটমুক্ত একটি শিক্ষা পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছে। যা বর্তমান উপাচার্য মহোদয়ের সুদক্ষ প্রশাসনিক দক্ষতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

 ড. মীজানুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ উপাচার্য। তাঁরই ঘোষণায় ২০২১ সাল থেকে কোনো শিক্ষক পিএইচডি ডিগ্রি ব্যতিত অধ্যাপক হতে পারছেন না।এটি বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। জগন্নাথ বিশ্ববিদালয়ই বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ১০৪ জন অধ্যপকের মধ্যে ১০২ জনই পিএইচডি ডিগ্রিধারী, বাকি ২ জনের পিএইচডি ডিগ্রি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।অতীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রকাশনা ছিল না কিন্তু ড. মীজানুর রহমানের হাত ধরেই বর্তমানে ১৬ টি বই প্রকাশিত হয়েছে। দেশের অনেক পুরনো সুপ্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে অংশ নিতে সক্ষম হয়নি সেখানে নবীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজস্ব প্রকাশনা নিয়ে প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সুনামের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে আসছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। যা বর্তমান উপাচার্যের কারণেই সম্ভব হয়েছে। ড.মীজানুর রহমানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পুরান ঢাকার মতো জায়গায় বহুল আকাঙ্ক্ষিত সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম এবং সবচেয়ে বড় সমাবর্তন।যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিরাট প্রাপ্তি। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২০ সালে ১৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেছে।২০ অক্টোবর, ২০২০ দেশের একমাত্র অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাত্রীদের জন্য বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।ছাত্রীদের এই হলটি উদ্বোধনের মাধ্যমেই অনাবাসিকতার তকমা ঘুচেছে।এটি উপাচার্য মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফসল।

পুরনো ঢাকার মত জায়গায় ড. মীজানুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে একটি সাংস্কৃতিক আবহ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।যা পুরান ঢাকাবাসীর জন্য অনন্য পাওয়া। পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রা, নাচ-গান, যাত্রাপালা পরিবেশনার মাধ্যমে পুরান ঢাকাকে একটি জাঁকজমক পরিবেশ প্রদানে ড. মীজানুর রহমান অসামান্য অবদান অব্যাহত রেখেছেন এবং সেটি প্রশংসার দাবি রাখে। অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান একজন সুলেখকও বটে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে তাঁর প্রায় তিরিশটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৯২ সালে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত তাঁর গবেষণাধর্মী পুস্তক ‘কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ’ (দুই খণ্ড) এছাড়াও তাঁর রচিত ‘বাজারজাতকরণ’, ‘স্নাতক বাজারজাতকরণ’,’বাজারজাতকরণ নীতিমালা’,ও ‘বাজারজাতকরণ’ (সহজ সংস্করণ) ইত্যাদি মার্কেটিং ছাত্র- শিক্ষকদের বহুল ব্যবহৃত পাঠ্যবই। করোনা মহামারির মধ্যে লেখা প্রবন্ধ দিয়ে ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়েছে ‘সংকটে মার্কেটিং’ বইটি। এছাড়া ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালি ও বাংলাদেশ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও উন্নয়ন ভাবনা’, ‘উত্তর গণতন্ত্র ও লিংকনের পিপল’ ইত্যাদি তাঁর রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী বই। মুক্তিযুদ্ধ ও সমসাময়িক বিষয়ে তাঁর অনন্য রচনা ‘বঙ্গবন্ধু মহাকালের নায়ক’। এবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাঁর প্রকাশিত বই ‘বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনা ও সাম্প্রতিক বাংলাদেশ’।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ইতোমধ্যে সাড়ে সাত বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত করছেন ড. মীজানুর রহমান। বিগত বছরে তাঁর মেধা, মনন, বিচক্ষণতা ও দক্ষ প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব দিয়ে উন্নত ও অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম করেছেন। উনার আগে তিন জন উপাচার্য দায়িত্ব পালন করলেও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে মীজানুর রহমানের কৃতিত্ব সর্বাগ্রে। এ বছর মার্চ মাসে তাঁর দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কি ড. মীজানুর রহমানের মত একজন দক্ষ প্রশাসক পাবে? বর্তমান ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে? এমন প্রশ্ন মনে রয়েই গেল। বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের অহংকার ড. মীজানুর রহমান বিভিন্ন দেশে সেমিনার, কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন এবং ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে বাংলাদেশ বিষয়ক বক্তৃতা প্রদান করেছেন- ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, রাশিয়া, বুলগেরিয়া, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, নেপাল, চীন, তুরস্ক, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, কানাডার মত দেশে। একজন সফল রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে তাঁর রয়েছে সুখ্যাতি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্মে মিডিয়া মুখর তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ড. মীজানুর রহমান তাঁর নিরলস পরিশ্রম দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে গেছেন সাফল্যের মসনদে।

ড. মীজানুর রহমানের জন্যই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ধারী শিক্ষার্থীরা নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁর মতো বহুমুখী প্রতিভার একজন যোগ্য মানুষকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার অভিভাবক হিসেবে পেয়ে সত্যিই ধন্য ও কৃতজ্ঞ।

জন্মদিনে আমরা তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর