১.
নদী, এই বৃষ্টি গেছে বহুদূর।।
জানি তুমি কখনো বাসনি ভালো
গড়ে তোলা শখের নীড়ে বসে আছো আজো।
অলক্ষে, নিজের সাথে তোমার অজানা সংলাপ
বৃথা সব, বৃথা সব স্বপ্ন-কল্প স্রোতের রেখা
দু’দিন গিয়ে তিন দিনে হয়ে গেলে অবুঝ তরঙ্গ।
একসময় গীতবিতান নিয়ে বসতাম আমরা দু’জন
একসময় চরের জলে গা ভিজাতাম তুমি-আমি।
এক একটি দিন ছিল এক ঝাঁক বলাকা দেখতে পাওয়ার খুশি
এক একটি দিন ছিল সবুজ বন্যার মনোরম সুখ রাশি রাশি।
খোলা ছিল মনের বাগান, দু’জনের সামান্য বিলাস,
খোলা ছিল বুনো ফুলে সেজে নেয়ার অফুরন্ত জৌলুস।
নদী, তুমি ছিলে স্বপ্ন পূরণের ফুল কুড়ানো দ্বীপ,
আঙ্গুলের ছোঁয়ায় জেগে ওঠা কবুতরের আলিঙ্গন।
স্নিগ্ধ ডালপালা শির উঁচিয়ে তোমাকে দেখেছিল।
প্রতিটি মুহূর্তে সুন্দর সন্ধ্যায় আমাদের চুমোতে বেড়েছে ঋণ,
প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের নীল বিচালি মৃদু শ্বাসে হয়েছে সজীব,
ভালোবেসেছিলে বিবাহের দিনের বিরুদ্ধে, কারণ তা ছিল দীর্ঘ
ভালোবেসেছিলে ঘোমটার বিরুদ্ধে, কারণ তা ছিল গান শেষের খেলা।
তবু প্রতীক্ষায় কাটে আমার বৃষ্টি-পেখম স্রোত
তবু বদলে যাওয়া রুপালি সকালে তোমাকেই খুঁজি, নাটকীয় বিকেলেও।
ভালোবাসা বৃষ্টি হোক, ঝড় হোক দু’প্রহরের আর্দ্র পললে।
২.
নন্দিনী, তুমি আর সময় পাও না কথা বলার?।।
নন্দিনী, সপ্তাহখানেক পর তোমার সংসার নিয়ে তুমি হলে খুব ব্যস্ত
তখন বিকেলের বৃষ্টিভেজা পশমি চুলের গন্ধ তোমার কাছে অসার,
তখন হাতে হাত রেখে পথ চলা, রিকশায় বসে ভিড়ের শব্দে খুনসুটি দু’জনের-
সব ভুল বলে ছেড়ে, নিজের পরিবারে স্বপ্নময়, তুমি আজ সেখানে অভ্যস্ত।
নন্দিনী, তবু এই পৃথিবীর মতো সত্য আমার-তোমার ভালোবাসা
শব্দ তরঙ্গ আর আলোকরেখার মতো আমাদের রঙিন কথামালা।
তুমি বলবে ‘শয়তান’, শাসন করে জানাবে ‘ফালতু কথা’ বলো না-
‘আচ্ছা তুমি আর জলির পিছনে, প্রতিজ্ঞা করো, লাগবে না-’
কত কথা জমা হয় প্রতিদিন, কত হিসেবে-নিকেশ, সরল সাগ্নিক,
সবই থাকবে স্মৃতির পাতায়, কঠিন বাস্তবতায় তুমি যখন জনান্তিক।