২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, সকাল ১১:৪৩
নোটিশ :
Wellcome to our website...

জীবন বৃথা গেল! বৃথা যাইতে দাও! অধিকাংশ জীবন বৃথা যাইবার জন্য হইয়াছে!

রিপোর্টার
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন

সুইটি রাণী বণিক।।

 আমি যখন চতুর্থ শ্রেনিতে পড়ি তখন থেকে তার ছবিটা ধারণ করেছি আমার হৃদয় মাঝে! যখন বাংলা সাহিত্য  পড়তে শুরু করি তখন থেকে প্রেমে পরি “কবিগুরু ” লেখনীতে! তার মধ্যে “শেষের কবিতা ও বিচিত্র প্রবন্ধ এর উপস্থাপন আমার কাছে এক ভিন্নধর্মী প্রকাশ মনে হয়েছে!  ভাবের নিগূঢ় মাহাত্ম্য যেন প্রস্ফুটিত হয়েছে কথার ছলে এক জ্ঞানের আধ্যাত্মিক জগতে! এখানে ও খুঁজে পেলাম  “Surrealism “বা  পরাবাস্তববাদী যুগের সুচনা! পরাবাস্তববাদ (ইংরেজি: Surrealism) এ-মতবাদের মূলকথা অবচেতনমনের ক্রিয়াকলাপকে উদ্ভট ও আশ্চর্যকর সব রূপকল্প দ্বারা প্রকাশ করা। … পরাবাস্তববাদী শিল্পীর লক্ষ্য হল তার কৌশলের মাধ্যমে সেই সত্যকে গভীর থেকে তুলেধরা!

” বিচিত্র প্রবন্ধে  “পনেরা-আনা” নিয়ে আমি আলোচনা করতে চলেছি—

“ময়ুরের লেজ যে কেবল রঙচঙে জিতিয়াছে, তাহা নহে—তাহার বাহুল্যগৌরবে শালিকখঞ্জন ফিঙার পুচ্ছ লজ্জায় অহরহ অস্থির।”

এখানে বাহ্যিক সৌন্দর্য এর চেয়ে ময়ুরের লজ্জার আবরণে গুনে গুণান্বিত করেছেন এক অবয়ব সৌন্দর্য  লীলায়, যেন নিস্পাপ সেই অবলোকন!

” যে মানুষ আপনার জীবনকে নিঃশেষে অত্যাবশ্যক করিয়া তুলিয়াছে, সে ব্যক্তি আদর্শপুরুষ সন্দেহ নাই, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তাহার আদর্শ অধিক লোকে অনুসরণ করে না;–যদি করিত তবে মনুষ্যসমাজ এমন একটি ফলের মতো হইয়া উঠিত, যাহার বীচিই সমস্তটা, শাঁস একেবারেই নাই। কেবলই যে লোক উপকার করে, তাহাকে ভালো না বলিয়া থাকিবার জো নাই, কিন্তু যে লোকটা বাহুল্য, মানুষ তাহাকে ভালোবাসে।”

 কারণ, বাহুল্যমানুষটি সর্ব্বতোভাবেই আপনাকে দিতে পারে। পৃথিবীর উপকারী মানুষ কেবল উপকারের সঙ্কীর্ণ দিক্ দিয়াই আমাদের একটা অংশকে স্পর্শ করে;–সে আপনার উপকারিতার মহৎ প্রাচীরের দ্বারা আর-সকল দিকেই ঘেরা; কেবল একটি দরজা খোলা, সেখানে আমরা হাত পাতি, সে দান করে। আর, আমাদের বাহুল্যলোকটি কোনো কাজের নহে, তাই তাহার কোনো প্রাচীর নাই। সে আমাদের সহায় নহে, সে আমাদের সঙ্গীমাত্র। উপকারী লোকটির কাছ হইতে আমরা অর্জ্জন করিয়া আনি, এবং বাহুল্যলোকটির সঙ্গে মিলিয়া আমরা খরচ করিয়া থাকি। যে আমাদের খরচ করিবার সঙ্গী, সেই আমাদের বন্ধু।

 বিধাতার প্রসাদে হরিণের শিং ও ময়ুরের পুচ্ছের মতো সংসারে আমরা অধিকাংশ লোকই বাহুল্য, আমাদের অধিকাংশেরই জীবন জীবনচরিত লিখিবার যোগ্য নহে, এবং সৌভাগ্যক্রমে আমাদের অধিকাংশেরই মৃত্যুর পরে পাথরের মূর্ত্তি গড়িবার নিষ্ফল চেষ্টায় চাঁদার খাতা দ্বারে দ্বারে কাঁদিয়া ফিরিবে না।

“কবি গুরু ” এখানে আমাদের জীবন বোধের সৌন্দর্যকে মনের অভিব্যাক্তির মাঝে তুলে ধরের কখনো আক্ষেপে আবার কখনো ভালবেসে! মনুষ নিজের উপলব্ধি করে যায় তার জীবদ্দশায়, কিন্তু গুরুত্ব পায় মৃত্যুর পরে!

” মরার পরে অল্প লোকেই অমর হইয়া থাকেন, সেইজন্যই পৃথিবীটা বাসযোগ্য হইয়াছে। ট্রেণের সব গাড়িই যদি রিজার্ভ গাড়ি হইত, তাহা হইলে সাধারণ প্যাসেঞ্জারদের গতি কী হইত? একে তো বড়ো লোকেরা একাই একশো—অর্থাৎ যতদিন বাঁচিয়া থাকেন, ততদিন অন্তত তাঁহাদের ভক্ত ও নিন্দুকের হৃদয়ক্ষেত্রে শতাধিক লোকের জায়গা জুড়িয়া থাকেন—তাহার পরে, আবার, মরিয়াও তাঁহারা স্থান ছাড়েন।”

অতি বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে আমরা কিনারায় হেটে যাই, কি চমৎকার ভাবের আবরণ অথচ, সত্যিটা যেন বড় উচিত কথা বলে মনে হয়, ভল ও মন্দের বর্ননার মধ্যে দিয়ে মানব চরিত্রের চিরাইত প্রথা!

  “পৃথিবী এত সঙ্কীর্ণ যে, জীবিতের সঙ্গে জীবিতকে জায়গার জন্যে লড়িতে হয়। জমির মধ্যেই হউক্‌ বা হৃদয়ের মধ্যেই হউক্‌, অন্য পাঁচজনের চেয়ে একটুখানি ফলাও অধিকার পাইবার জন্য কত লোকে জালজালিয়াতি করিয়া ইহকাল-পরকাল খোয়াইতে উদ্যত।”

ভালবাসাহীন সকল ভুমিই মরুভূমির মতন! কেউ সহজ ভাবে বুঝতে চায় না, লোভ-লালসা আর দন্দ্বের মধ্যে দিয়েই মানুষ নিজেকে ফলাতে চায় বীর নিজের আধিপত্যে! আর তার জন্য নিষ্পাপ পৃথিবীকে করে অসহায়, বাস বাসের অযোগ্য!

” নীতিজ্ঞেরা আমাদিগকে নিন্দা করেন। বলেন, আমাদের জীবন বৃথা গেল। তাঁহারা আমাদিগকে তাড়না করিয়া বলিতেছেন—ওঠো, জাগো, কাজ করো, সময় নষ্ট করিয়ো না! কাজ না করিয়া অনেকে সময় নষ্ট করে সন্দেহ নাই—কিন্তু কাজ করিয়া যাহারা সময় নষ্ট করে, তাহারা কাজ ও নষ্ট করে, সময়ও নষ্ট করে। তাহাদের পদভারে পৃথিবী কম্পান্বিত এবং তাহাদেরই সচেষ্টতার হাত হইতে অসহায় সংসারকে রক্ষা করিবার জন্য বলিয়াছেন—“সম্ভবামি যুগে যুগে।”

 জীবন বৃথা গেল! বৃথা যাইতে দাও! অধিকাংশ জীবন বৃথা যাইবার জন্য হইয়াছে! এই পনেরো-আনা অনাবশ্যক জীবনই বিধাতার ঐশ্বর্য্য সপ্রমাণ করিতেছে। তাঁহার জীবনভাণ্ডারে যে দৈন্য নাই, ব্যর্থ প্রাণ আমরাই তাহার অগণ্য সাক্ষী। “

আমাদের  জীবনের  অনেক সময় চলে যায় কর্মহীন অবস্থায়, আর তার জন্য আমরা নিরন্তর আফসোস করে থাকি,বৃথা সময় চলে যাচ্ছে! আসলে জীবনের সব সময়কে কাজে লাগানো যায় না! কিছু বিফলতা,কিছু ব্যার্থতা থাকবেই – যার ফল হিসেবে আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করি!  আর অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট জীবনে সবচেয়ে বেশি কাজে আসে!

” বাঁশি যেমন আপন শূন্যতার ভিতর দিয়া সঙ্গীত প্রচার করে, আমরা সংসারের পনেরো-আনা আমাদের ব্যর্থতার দ্বারা বিধাতার গৌরব ঘোষণা করিতেছি। বুদ্ধ আমাদের জন্যই সংসার ত্যাগ করিয়াছেন, খৃষ্ট আমাদের জন্য প্রাণ দিয়াছেন, ঋষিরা আমাদের জন্য তপস্যা করিয়াছেন, এবং সাধুরা আমাদের জন্য জাগ্রত রহিয়াছেন।  জীবন বৃথা গেল! যাইতে দাও! কারণ, যাওয়া চাই। যাওয়াটাই একটা সার্থকতা। নদী চলিতেছে—তাহার সকল জলই আমাদের স্নানে এবং পানে এবং আমন ধানের ক্ষেতে ব্যবহার হইয়া যায় না। তাহার অধিকাংশ জলই কেবল প্রবাহ রাখিতেছে! আর কোনো কাজ না। করিয়া কেবল প্রবাহরক্ষা করিবার একটা বৃহৎ-সার্থকতা আছে। তাহার যে জল আমরা খাল কাটিয়া পুকুরে আনি, তাহাতে স্নান করা চলে, কিন্তু তাহা পান করি না; তাহার যে জল ঘটে করিয়া আনিয়া আমরা জালায়। ভরিয়া রাখি, তাহা পান করা চলে, কিন্তু তাহার উপরে আলো-ছায়ার উৎসব হয় না। উপকারকেই একমাত্র সাফল্য বলিয়া জ্ঞান করা কৃপণতার কথা, উদ্দেশ্যকেই একমাত্র পরিণাম বলিয়া গণ্য করা দীনতার পরিচয়।”

অবোধ লীলায় তিনি আরো বলেন” আমরা সাধারণ পনেরো-আনা, আমরা নিজেদের যেন হেয় বলিয়া না জ্ঞান করি। আমরাই সংসারের গতি। পৃথিবীতে, মানুষের হৃদয়ে আমাদের জীবনস্বত্ব। আমরা কিছুতেই দখল রাখি না, আঁক্‌ড়িয়া থাকি না, আমরা চলিয়া যাই। সংসারের সমস্ত কলগান আমাদের দ্বারা ধ্বনিত, সমস্ত ছায়ালোক আমাদের উপরেই স্পন্দমান। আমরা যে হাসি, কাঁদি, ভালোবাসি; বন্ধুর সঙ্গে অকারণ খেলা করি; স্বজনের সঙ্গে অনাবশ্যক আলাপ করি; দিনের অধিকাংশ সময়ই চারিপাশের লোকের সহিত উদ্দেশ্যহীনভাবে যাপন করি, তার পরে ধুম করিয়া ছেলের বিবাহ দিয়া তাহাকে আপিসে প্রবেশ করাইয়া পৃথিবীতে কোনো খ্যাতি না রাখিয়া মরিয়া-পুড়িয়া ছাই হইয়া যাই—আমরা বিপুল সংসারের বিচিত্র তরঙ্গলীলার অঙ্গ; আমাদের ছোটোখাটো হাসিকৌতুকেই সমস্ত জনপ্রবাহ ঝল্‌মল্‌ করিতেছে, আমাদের ছোটোখাটো আলাপে-বিলাপে সমস্ত সমাজ মুখরিত।”

ব্যর্থতা তার কাছে অমূল্য রতন! তিনি বলেন ” আমরা যাহাকে ব্যর্থ বলি, প্রকৃতির অধিকাংশই তাই। সূর্য্যকিরণের বেশির ভাগ শূন্যে বিকীর্ণ হয়, গাছের মুকুল অতি অল্পই ফল পর্য্যন্ত টিঁকে। কিন্তু সে যাঁহার ধন তিনিই বুঝিবেন। সে ব্যয় অপব্যয় কি না, বিশ্বকর্ম্মার খাতা না দেখিলে তাহার বিচার করিতে পারি না। আমরাও তেম্‌নি অধিকাংশই পরস্পরকে সঙ্গদান ও গতিদান ছাড়া আর কোনো কাজে লাগি না; সেজন্য নিজেকে ও অন্যকে কোনো দোষ না দিয়া, ছট্‌ফট্‌ না করিয়া, প্রফুল্ল হাস্যে ও প্রসন্নগানে সহজেই অখ্যাত অবসানের মধ্যে যদি শান্তিলাভ করি, তাহা হইলেই সেই উদ্দেশ্যহীনতার মধ্যেই যথার্থভাবে জীবনের উদ্দেশ্য সাধন করিতে পারি।”

সৃষ্টি কর্তারকাছে তার কৃতজ্ঞতা বোধ আমরা দেখি এই আচরনগুলো মধ্যে ” বিধাতা যদি আমাকে ব্যর্থ করিয়াই সৃষ্টি করিয়া থাকেন, তবে আমি ধন্য; কিন্তু যদি উপদেষ্টার তাড়নায় আমি মনে করি আমাকে উপকার করিতেই হইবে, কাজে লাগিতেই হইবে, তবে যে উৎকট ব্যর্থতার সৃষ্টি করি, তাহা আমার স্বকৃত। তাহার জবাবদিহী আমাকে করিতে হইবে। পরের উপকার করিতে সকলেই জন্মাই নাই অতএব উপকার না করিলে লজ্জা নাই। মিশনারী হইয়া চীন উদ্ধার করিতে না-ই গেলাম;–দেশে থাকিয়া শেয়াল শিকার করিয়া ও ঘোড়দৌড়ে জুয়া খেলিয়া দিন-কাটানোকে যদি ব্যর্থতা বলো, তবে তাহা চীন-উদ্ধারচেষ্টার মতো এমন লোমহর্ষক নিদারুণ ব্যর্থতা নহে।”

তার ভালবাসা যেন চিরসবুজ ” সকল ঘাস ধান হয় না। পৃথিবীতে ঘাসই প্রায় সমস্ত, ধান অল্পই। কিন্তু ঘাস যেন আপনার স্বাভাবিক নিস্ফলতা লইয়া বিলাপ না করে– সে যেন স্মরণ করে যে, পৃথিবীর শুষ্কধূলিকে সে শ্যামলতার দ্বারা আচ্ছন্ন করিতেছে, রৌদ্রতাপকে সে চিরপ্রসন্ন স্নিগ্ধতার দ্বারা কোমল করিয়া লইতেছে। বোধ করি ঘাসজাতির মধ্যে কুশতৃণ গায়ের জোরে ধান্য হইবার চেষ্টা করিয়াছিল—বোধ করি সামান্য ঘাস হইয়া না থাকিবার জন্য, পরের প্রতি একান্ত মনোনিবেশ করিয়া জীবনকে সার্থক করিবার জন্য তাহার মধ্যে অনেক উত্তেজনা জন্মিয়াছিল—তবু সে ধান্য হইল না। কিন্তু সর্ব্বদা পরের প্রতি তাহার তীক্ষ্ণলক্ষ্য নিবিষ্ট করিবার একাগ্র চেষ্টা কিরূপ, তাহা পরই বুঝিতেছে। মোটের উপর এ কথা বলা যাইতে পারে যে, এরূপ উগ্র পরপরায়ণতা বিধাতার অভিপ্রেত নহে। ইহা অপেক্ষা সাধারণ তৃণের খ্যাতিহীন, স্নিগ্ধ-সুন্দর, বিনম্র-কোমল নিষ্ফলতা ভালো।”

মানুষকে নিয়ে তার ভাবনাজগৎ” সংক্ষেপে বলিতে গেলে মানুষ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত—পনেরো-আনা এবং বাকী এক-আনা। পনেরো-আনা শান্ত এবং এক-আনা অশান্ত। পনেরো-আনা অনাবশ্যক এবং এক-আনা আবশ্যক। বাতাসে চলনশীল জ্বলনধর্ম্মী অক্সিজেনের পরিমাণ অল্প, স্থির শান্ত নাইট্রোজেনই অনেক। যদি তাহার উল্টা হয়, তবে পৃথিবী জ্বলিয়া ছাই হয়। তেম্‌নি সংসারে যদি কোনো-একদল পনেরো-আনা, এক আনার মতোই অশান্ত ও আবশ্যক হইয়া উঠিবার উপক্রম করে, তখন জগতে আর কল্যাণ নাই, তখন যাহাদের অদৃষ্টে মরণ আছে, তাহাদিগকে মরিবার জন্য প্রস্তুত হইতে হইবে।”

অসাধারণ জীবনদর্শনের বর্ননা, আমরা শ্রুতিমধুর ও রুচিবোধের অভিব্যক্তি সচ্ছ ও প্রানোচ্ছল দৃষ্টিনন্দন লেখনী মধ্যে জ্ঞানের হিল্লোল জাগায় আমাদের প্রাণে! কি অসম্ভব সুন্দর বাস্তবতার ছোয়া ও শব্দ চয়ন বিমোহিত করে যেন পাঠক হৃদে!কবি তার সমস্ত ঐশ্বর্য ডেলে দিয়েছেন তার শৈল্পিক হাতের ছোয়ায় ও তার চিন্তার জগতের সকল সম্পদ ডেলে দিয়েছেন তার সৃষ্টি কর্মের প্রতিটি ছোয়ায়, যেন প্রতি মূহুর্তে!  এজন্যই তিনি মহাবিশ্বের এক জলন্ত নক্ষত্র যার উত্থান আছে চিরায়ত বসন্তের মত, পতন নেই!

এজন্যই তাঁর প্রতি আবারিত ভালবাসা সমস্ত হৃদয়জুড়ে সকলের, আছে – রবে বহু যুগ- যুগান্তরে ইতিহাসের!


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর