ভার্সিটিনিউজ প্রতিনিধি।।
১ সেপ্টেম্বর,২০২১, বুধবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রণীত “Doubling Rice Productivity in Bangladesh “(বাংলাদেশে চালের উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণকরণ-ডিআরপি শীর্ষক কৌশলপত্র উপস্থাপন ও মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, জাতীয় পরিকল্পনাবিদ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, অনুষ্ঠানে সভাপতির আসন অলংকৃত করেছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠানে কৌশলপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী চালের উৎপাদনের তথ্যে ঘাটতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “কোথাও তথ্যের গরমিল রয়েছে। আমি বিবিএসকে আহ্বান করবো, আগামী কৃষি শুমারিতে যেন উৎপাদনের সঠিক তথ্য থাকে। সামান্য ভুলও যেন না থাকে। প্রয়োজনে শুমারিতে দেরি হোক। কিন্তু সঠিক তথ্য উঠে আসুক।”
এমন বিজ্ঞানভিত্তিক চমৎকার একটি অনুষ্ঠানে আলোচনা করার সুযোগ প্রদান করায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বক্তব্য শুরু করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতেই বলেন,
“যেটা অর্জনযোগ্য বাস্তবতা সেটা স্বপ্ন বলবো কেন?প্রত্যাশা হতে পারে, আশা হতে পারে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন,
সরকারের কৃষিখাত সংশ্লিষ্টরা চালের উৎপাদনের যে তথ্য দেয়, তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। বিশেষ করে চাল উৎপাদনের কোনো সঠিক তথ্য নেই।’
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন,”বিবিএসের মাথাপিছু চাল ভোগের পরিমাণ ধরে হিসাব করলে দেশে দুই কোটি ৮০ লাখ টনের বেশি চালের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে এর থেকে অনেক বেশি। তাহলে বাকি চাল গেল কোথায়? তারপরও কেন আমদানি করতে হচ্ছে? নিশ্চয় উৎপাদনের তথ্যে ভুল রয়েছে।”
বাজারে চালের দাম কমাতে দীর্ঘদিন ধরে প্রাইজ কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয় উপস্থাপিত কৌশলপত্রে। সে প্রসঙ্গ টেনে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, “কেন আপনারা প্রাইজ কমিশন চান? তাহলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কী কাজ? এমন একটি অধিদপ্তর ভারতেও নেই। তাদের কাজ কি শুধু প্রতিদিনের দাম-দরের হিসাব রাখা? ওই সংস্থাকে দায়িত্ব নিতে হবে। না হয় সেটা ভেঙে প্রাইজ কমিশন করতে হবে।”
বক্তৃতা প্রদানকালে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, “দেশে চাল উৎপাদনে যে সফলতা এসেছে সেটা ভালো। আরও অনেক এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের হেক্টরপ্রতি ফলন এখনো মাত্র ২ দশমিক ৭৪ টন। যেখানে জাপান হেক্টরে পাঁচ টন আর চীন সাড়ে ছয় টন ধান পায়। এমনকি ভিয়েতনামের ফলন ৫ দশমিক ৮৪ টন। আমরা চীন জাপানের মতো উন্নত নয়, কিন্তু ভিয়েতনামের মতো সাধারণ দেশের মতো ফলনও করতে পারি না।”
ছোট্ট দেশ নেদারল্যান্ডসের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “ছোট্ট একটি দেশ, যা বাংলাদেশের অর্ধেকের কম, তারা ৯৪ বিলিয়ন ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করছে। আমরা পাঁচ বিলিয়নে আটকে রয়েছি। যেখানে আমরা কৃষিপ্রধান দেশ।”
কৃষিকে উন্নত করার প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী ড. আলম বলেন, “কৃষিকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। ব্যাপক প্রকল্প-কর্মযজ্ঞ চলে। কিন্তু দেশের এ আবহাওয়ানির্ভর কৃষির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। আমাদের কৃষিকে উন্নত করতে হবে। প্রয়োজনে গ্রিনহাউজ কৃষিতে যেতে হবে।”