খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ড. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৭ শিক্ষার্থীর ২ শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কারসহ মোট ৪৪ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিক্ষক ড. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ৪৮ পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে পর্যালোচনা শেষে চার ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কারসহ ৪৪ ছাত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। যা আজ অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়েছে।
আজীবন বহিষ্কার হওয়া চার শিক্ষার্থী হলেন সাদমান নাহিয়ান সেজান, হাসান আব্দুল কাইয়ুম, মো. কামরুজ্জামান রাজ্জাক ও রিয়াজ খান নিলয়।
এ ছাড়া ৭ শিক্ষার্থীকে দুই শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার ও আজীবন হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর এক শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, ২২ শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার ও ১০ শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর খুলনা প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ড. মো. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানসিক চাপ দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই শিক্ষককে ক্যাম্পাসের ভেতরে পথরোধ করে শিক্ষার্থীরা তার রুমে নিয়ে যান।
এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীরা এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে আন্দোলন করে আসছিলেন।
পরে গত ৩ ডিসেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। সিন্ডিকেটের ওই সভায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়, যা ২৩ ডিসেম্বরের আরেকটি জরুরি সভার মাধ্যমে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
আগামীকাল ৭ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়া হবে এবং ৯ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে।