রেজওয়ান আহমেদ
পাঁচ সন্তানের এক প্রাণহীন জননীর বুকে প্রাণের দীপ জ্বেলে দিয়ে তার সন্তানেরা তার বেদীর ওপর বসে তার সৎকার সমাধা করার আগে তার সংসারধর্মের স্মৃতিচারণ করে। এই পরাবাস্তববাদী প্লটেই জননীর কাহিনী দাঁড়িয়ে।
সন্তানদের এহেন স্মৃতিচারণে পুরনো মানসিকতার এক সংসারী লক্ষ্মীর ছবি ফুটে উঠেছে। সে ছবিতে রঙ চড়িয়েছে সংস্কারপ্রবণতা, জেনারেশন গ্যাপ, স্বার্থপর মনোবৃত্তি, বংশমর্যাদাসচেতনতা এবং ক্ষেত্রবিশেষে সন্তানদেরকে অতিরিক্ত শাসনের মনোভাব। প্রশ্ন উঠতে পারে – মা কি মমতাময়ী হতে পেরেছেন? অথবা মনোচরিত্রগত এমন ব্যবধানের প্রভাব সন্তানদের সাথে তার সম্পর্কের ওপর কতটুকু পড়েছে?
মৃত একটি চরিত্রকে প্রধান চরিত্রে রূপদান করলেও গল্পকার দীনেন্দ্র চরিত্রটিকে কম দরদ দিয়ে লেখেননি। বরং এই অন্ধসন্তানের চোখে দেখা একটা বিমূর্ত ছবিতেই রেখেছেন গল্পের আসল চমক।
গল্প পড়ার শেষে –
১। মৃত্যু এসে বাবার মুখে হাত চাপা দিয়ে কথা থামিয়ে দিল। বাবা তৈরি ছিল, চলে গেল।
২। ‘আমি সৌন্দর্য ভালবাসি, কিন্তু ভালবাসা আরও বেশি ভালবাসি।’
৩। মা আমার অসুখটাই দেখেছিল, সুখ দেখেনি।
৪। রোগ নোঙরামি কষ্ট সব সহ্য করি তাতে তোমার আপত্তি নেই; আপত্তি সুখ পাবার ব্যবস্থা করতে।
বিমল কর মূলত পত্রিকাকেন্দ্রিক লেখক হয়ে গড়ে উঠেছেন। তিনি ‘পশ্চিমবঙ্গ’, ‘সত্যযুগ’, ‘দেশ’, ‘শিলাদিত্য’, ‘গল্পপত্র’ পত্রিকসমূহের সাথে যুক্ত ছিলেন।
(লেখক – শিক্ষার্থী, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ৩য় সেমিস্টার, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।)