সুইটি বনিক
মনুষ হতে চেয়েছি বারংবার! হলাম প্রকৃতি!ভেবেছিলাম জীবনানন্দের কবিতা হবোহরিদ মদের মত কচি ঘাসের শিশির পান করবো গ্লাসে গ্লাসে! তবু মাতাল হবো না কিছুতেই!
সৌভাগ্য আর মন্দ ভাগ্য যাই হোক মাতাল আমি অবশেষে! সমস্ত পৃথিবীর যখন অসুস্থ, আমি তখন ফ্রয়েডি! আমার অচেতন মন আমার সচেতন মন -তুমি কি জান, হে পৃথিবীর? এ বিশ্ব চরাচরে “গুপ আমার ভালবাসা, ব্যাপ্ত জগৎ পরিক্রমা “! আমার অবচেতন মন চলে তার নিজস্ব গতিতে। আর চেতন মন সে এক পদ্ম সরোবর! ক্রমাগত স্রোতের সাথে কথা কয় কালের নিরবধি!
নিশ্চুপ আধারে বাঁধে ঘর, কালের খেয়ায় আক্ষেপ- সম্মোহনী আত্মমিলনের দাহে!
তুমি কি চাও পলাশ? আমার মহোদয় আমি চাই ঈশ্বর আপনাকে সুস্থ রাখুন, শ্রী-চরনে এটাই প্রার্থনা! শুধু এই? হ্যা আমার মহোদয়! নামটা সুন্দর! বাবা রেখেছেন! এ নামে কেউ কোন দিন ডাকে নি! তবে এটাই যে বললে? আপনি আমাকে আধারে রেখেছেন তাই, আধারী নামটি উপস্থাপন করেছি! আচ্ছা তাই হবে! মহোদয়ের চোখের কোনে এক বিন্দু শিশির দেখে পলাশের হৃদয় কাঁপে বসন্তের বিহঙ্গের মত!
আমার মহোদয় আপনি তো জানেন না, আপনি আমায় অন্তর আঁধারে রেখেছেন, সেখানে যতন করে ভালবাসার পরশ তো দিচ্ছেন! কিন্তু আমি যে আলোর মানুষ, আলোর জ্যোতি কে কি অন্তরালে রাখা যায়?
মানুষ যেখানে ভয় পায়, সেখানেই তার মহা-পরিক্রমা হয়! মহোদয়ের ভাবনার জগৎ প্রসারিত হয়! জলের তৃষ্ণায় , সে অমৃত পানে বিভোর, এ-তো প্রকৃতি নয়! যার গহ্বরে বিলিন হওয়া যায়, ফিরে আসা যায় না। অতল এই মহা-সমুদ্র পরিক্রমা থেকে, পুরে অঙ্গার হয়ে বিলীন হয়ে যায় মন যমুনায়!!
সমস্ত পৃথিবীর এক নোশার জগত! মদ- খেলেই কি মাতাল হওয়া যায় —?মহোদয় ব্যাক্তিটি খুব- জ্ঞানী গুনী ও সর্বজন সমাদ্রীত, কঠোর ও ন্যায়পরায়ন !
যাকে বাহির থেকে বুঝবার উপায় নাই, তার যে শিশু সুলভ শ্নেহবাৎসল্য প্রেমময় একটি কোমল মন আছে। জ্ঞান ও ভালবাসা এমনই অদৃশ্য বস্তু যার কাছে গুনীজনরা মাথা নত না করে পারেন না!
আমি হয়তো সমস্ত জীবন এমন মানুষের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম, তার জন্য এই ক্ষুদ্র জীবন উৎসর্গ নিশ্চিতভাবেই ভাবেই করা যায়! কিন্তু সেকি আমার অর্ঘ গ্রহন করবে?
আমার কাছে দেবতার চেয়ে মানুষ বড়!
প্রকৃতির কাছে পুরুষ শিশুর মত সরল
মানুষ চাইলে ভাল ও মন্দ দুটোই পারে।
পৃথিবীতে ভালবাসাই সব চাইতে বড় আত্মসম্পদ! ভালবাসা হীন পাপের রাজ্যে সকলি অনাসৃষ্টি,ধ্বংস – যজ্ঞ আর ——!
আর কি পলাশ? মহোদয় আমি জানি না আর যেন কি?
আর ভালবাসা হীন পথ বড় দীর্ঘ! মহোদয় আপনি ঠিক বলেছেন!
মনের বিপরীতে চলার নাম মন্দ বাসা!
আমি যদি হারিয়ে যাই, তুমি পথ খুঁজে নিও পলাশ। বলেছি না, আমি -আপনি ছাড়া শুন্য আমার মন মরুভূমি! মহোদয় আত্মসমৃদ্ধ যে ভালবাসা তা হৃদয় থেকে কখনো হারিয়ে যায় না! সুগন্ধি ফুলের মতো গন্ধ ছড়ায় মন অন্তরালে সময় যত ঘনিয়ে আসে মৃত্যুর দিকে সে ভালবাসা অমর হয় আমৃত্যু পথে! ভালবাসাই চির অমর এই বিশ্ব ভূমন্ডলে! চির পবিত্র এই ত্রি-ভুবনে! যর উপলব্ধি জাত ক্ষমতা সকলে হয় না এ জগৎ সংসারে!
আমার আপন ঘরে আপনি চির-অসীম!
যেখানে যাই, আমার সমস্ত মন জুরে সেই মহোদয়! আমি তার সব জানি, ভাল ও মন্দ! কিন্ত সে কিছুই জানে না আমার সম্পর্কে! বছর ছয় আগে একটা চিঠিতে সমস্তই লিখেছিলাম, কিন্তু তখন তার পরবার সময় পর্যন্ত ছিল না। কোন এক দাম্ভিকতা ছিল তার সমস্ত মন জুরে! গায়ে জোরে সব জয় করা যায় না, তখন সে জানতেন না! এখন তার মনের বড়ো জোর হইছে আর সেই জোরের ধৈর্যের গুনে আমি পরাজিত! মহোদয় আপনি অনেক বড়, তাই আপনার দুঃখ টাও অনেক বড় আজ, আমি বুঝি!
আমি যে বুঝি তা আপনি জানেন না। অবুঝ বলিয়া কাঁদায় সবাই, বুঝি বলিয়াই যে কাঁদি,আর এটাই কেউ বুঝে না!
তবে মনের গোপনে প্রশ্ন থেকে যায় কে বোঝে আর কে বোঝে না! কিন্তু আপনি আমি নির্বাক, বুঝি কিন্তু প্রকাশি না যার যার মতন করে!
বোবা আর অবুঝ থাকতে ভাললাগে মহোদয় আপনার কাছে। আপনার স্নেহ আর ভালবাসা, সে এক স্বর্গের অনুভূতি, সেখানে কোন তর্ক চলে না, সেখানে নির্বার থাকাই প্রাপ্তি, ও নিরব জীবন- দর্শন মেলে।
মহোদয় সময় ও পরিস্থিতি যাই হোক – আমার আকাঙ্খা, আপনার প্রাপ্তি চলেন চুপই থাকি! মনে মনে কত কথা বলি, তার হৃদয় পর্যন্ত এত কিছু যায় না জানি, তাই একলাই হাসি।
আমরা দুজনই সময়কে ভালবাসি! শুধু এটুকুই বুঝি। আর কিছুই বুঝি না,বলে আমার subconscious mind !
ওরে আমার অবচেতন মন তুই বড় ধৈর্য শীল এখন, আর শান্ত! আসলে প্রাপ্তিতে মনের অবসাদ ও ক্লান্তি দুর হয়! আর মন বয়ে চলে তার নিরব গন্তব্যে! এই বয়ে চলার নামই গতি বা সময়!
সময়ই ঈশ্বর, সময়ই অধীশ্বর! সময়কে যে ধারণ করতে পারে, কর্মে- মর্মে, সেই অপেক্ষায়, ধৈর্যে- সয্যৈ ;তারি প্রাপ্তি মেলে আপন আপন মনস্কামনা!
৩
সময়ের কাছে সীমারেখা হার মেনে যায়।
আজ সকালে মহোদয়ের ফোন পেয়ে ঘুম ভাংলো! সে বললো কেমন আছো পলাশ? আমি ভিষণ খুশি, আপনার ফোন পেয়ে অনেক ভালো আছি আমার মহোদয়! অনেক দিন তোমায় দেখিনা, তোমার একটা ছবি পাঠাও? আপনি কোথায়? আমি অনেক দুরে! আচ্ছা পাঠাই!
হঠাৎ মনটা দারুন ভাল হয়ে গেল, আমার মা দেখলাম মহোদয়কে অনেক পছন্দ করেন!
ওনি তার বন্ধু কে বলছিলেন আচ্ছা আমি যদি ওকে বিয়ের প্রস্তব দেই ও কি রাজি হবে? বন্ধু বলছিল নাও হতে পারে! কথাটা আমি শুনে ফেললাম! সবুজ বনের ভিতর সুন্দর ৩ তলা একটি সাদা বিল্ডিং। আমাকে অফিসিয়াল কাজের জন্য এখানে থাকতে দেয়া হলো! মহোদয় ও এখানে কাজে এসছেন!——–অনেক দিন তার দেখা ও ফোন পাইনি! প্রতিদিন তার ফোনের অপেক্ষায় থাকি! আমার নিষেধ যেন তাকে খুব বেশি দরকার না হলে ফোন না দেই!
জগতে অনেক প্রেম হয়, যা নিজের মর্জির বাহিরে। সে একজন অনেক বড় মাপের গুনীজন! সে আমার মত ক্ষুদ্র মানুষকে কেন, নক করেছে তার কোন কারন খুঁজে পাইনি!
যাই হোক মনের কোন এক কোনে আমিও তাকে রেখেছিলাম, তবে তা ভাল বেসে নয় ; মন্দ বেসে! হ্যা এক প্রকার বিরক্তি ই ছিল তার উপর! তার ব্যাখ্যা বিধাতা ছাড়া আর কাউকে বলা যায় না। তখন আমি তাকে মন থেকে গ্রহন করতে পারিনি! বুঝিনি, ভাল বাসিনি,শুধু তার দুয়ারে দারস্থ হয়েছিলাম অসহায়ের মত! তার পায়ের কাছে হাত জোর করে চোখের জলে কেঁদেছিলাম,অবুঝের মত! কোন এক দম্ভের জোরে সে আমার দুঃখ গুলো মূল্যায়ন করতে পারেনি!
যাই হোক স্মৃতি কথা, যত সব থাক মন অন্তরালে! আজ তার জন্য মন পোড়ে, হৃদয় গহীনে! কেন, এমন মন পরিবর্তন জানি না আমি! তবে এটুকু জানি ঈশ্বর হয়তো এটাই চায়!ভালবাসি, ভালবাসি আমার মহোদয় অবশেষে আমি একটা পাহাড় কিনে ফেলেছি! আমার ভালবাসা পাহাড় সমান মহোদয় আপনিতো জানেন না!
৪
যার আছে জ্ঞানের শক্তি তার আছে ইন্দ্রীয় শক্তি!! তবে সে যেখানে সেখানে স্রোতের মত ভেসে যায় না। তার স্থান, কাল,বিবেচনা করেই পথ চলতে হয়!
যারা দুষ্ট, জ্ঞান হীন, তারা অজুহাতী! এইসকল মানুষের কথার জ্বালানিতে টিকে থাকা মুশকিল! তাদের হইতে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখা উত্তম!
আমার মা ও বাবা দুজনেই মহোদয় কে নিয়ে পজিটিভ কথা বললেন! কিন্তু তারা এখনো জানে না, যে আমি তার প্রতি সমর্পিত! আমার আর ইহজগতে কিছু চাওয়ার নাই!
সে জ্ঞানী, সে ধ্যানী, সে আমার পরম আরাধ্য বস্তু! আমি তাকে পাহাড় সমান ভালবাসি, সে কিছুটা হয়তো বোঝে, বাকিটা পরিক্ষা করে!
সে জানে না “খুঁজলে জনম ঘর মেলে ন “!যাই হোক আজ তার সাথে দেখা হবার কথা।
আমাদের বাড়ির কাছ ঘেসে মেঘনার সাখা বয়ে চলেছে পদ্মার ভাঙ্গনের পথে! পাকা ঘাত, পাশে নারকেল গাছ আকাশে একটুকরো চন্দমুখী চাঁদ!
চাঁদের রূপালী আলোয় তাকে দেখা যাচ্ছে না,কারন সে কৃষ্ণ কালো! সে আমায় বললো, আর কখনো, ভালো বেসেছো? আমি অপ্রস্তুত হলেও, উপস্থিত জ্ঞান একেবারেই খাপাপ না! বলেছি, ভালোতো বেসেইছিলাম! তবে হলো না কেন? হয়নি, এজন্য যে ” হিন্দু ঘরের ছেলেরা প্রেম করে নিজের ইচ্ছায়, বিয়ে করে বাবা মার ইচ্ছে তে, যৌতুক নিয়ে “!
ভালোই হয়েছে, জ্ঞান হীন পাপির চে, জ্ঞানী পাপি অনেক ভালো! তো পলাশ, জ্ঞানী পাপিটা কে, আমি??মনে করেন ‘”হ'”! আচ্ছা! দেখা যাক!
আমার মহোদয় আমি দুঃক্ষিত! একটু রাগ মনে চলে এসছিল। কারন অনেক দিন আমাকে ভুলে থাকেন, তাই। কেন এ অপেক্ষা —–!আমার কিন্তু এই অপেক্ষা ভালো লাগেনা!
কি করতে চাও? কিছু করতে চাইনা, নৈকট্য চাই!ধৈর্য ধরো!
ধৈর্য বোকারা ধরে, সময়কে কাজে লাগাতে হয়, আমার মহোদয়! অস্থির হইও না পলাশ! সময়ের জন্যেই অপেক্ষা করো!
আমি অনেক ব্যাস্ত! আমার ঘর আছে কিন্তু, ঘর যে অর্ন্তসার শুন্য, তাতো কেউ জানে না! পরিনা ঘর ত্যাগ ও করতে! হতে পারে তোমাকে অনন্তকাল ধরে অপেক্ষা করতে হবে!বুঝতে পেরেছি আমার মহোদয়! আমার কপালে আপানার ঘরের চাল নেই!
যাক এসব কথা! যদি সকলের কাছ থেকে ই কষ্ট পাই, তবে কেন এ সম্পর্ক, চলেন ভেঙে দেই! না পলাশ! তা কখনোই হয় না! সম্মান তুমি পেয়েছো, এবং পাবে! মনে কোন সংসয় রেখো না! মন সকল কিছুকে স্পর্শ করে না! সামাজিক বিধি বন্ধন ছারাও যে ভালবাসা, তাই বয়ে চলে মনের স্রোতে! এই ভেসে যাওয়ার নামই ভালবাসা পলাশ! তুমিতো, জান না আমার মনে একটা অপেক্ষা ছিল একদিন আসবে কোন নদী, যে আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে কালে যাত্রায়!
মহোদয়, আপনি আসলেই জ্ঞানী,সাথে পাপি ও বটে! এ পাপ পূর্ণের পলাশ। ভালবাসায় পাপ নেই।বরং যেখানে ভালবাসা নেই সেখানে পাপ “বিরোজা”নদী হয়ে পালিয়ে যায়!
যামিনী শেষ হয়ে যাবে, চলুন ঘরে চাই, মা খাবার নিয়ে হয়তো বসে এখনো। পলাশ আমাকে ভুলে যেও না! কেন মরনের কথা বলেন মহোদয়? জানি না! তোমার নিষ্পাপ চোখ- বড় মায়াবী, যদি কেউ ডুবে যায়! না – ডুবন্ত যাহাজে, কেউ ডোবে না! আপনি নিশ্চিত থাকুন! এ ভালবাসা অনন্তকালের যাত্রা! আপনি বিনে আর কেহ নাই মোর মন আকাশে!
তোমারে পেয়ে এই মন স্বার্থক! আমি অনেক কাল বাচতে চাই!
কচি লেবুর পাতার মত, এ প্রেম গভীর থেকে আরো গভীরে পৌছায়!! অনন্ত আকাশ ভেদ করে যেন পরম স্বামী কে স্পর্শ করে!!! মনের ডাকে সারা দেবার নামই মনে হয় প্রেম! এ জগৎ সংসারে প্রেমের উপরে আর কিছুই হতে পারে না! প্রেমই অমৃত – প্রেমই জীবনের সার সত্তা!