রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে বহিরাগতদের থাকা নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষে কমপক্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসে শনিবার সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কলেজ ছাত্রলীগ সূত্র ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবা নাসরিন রূপা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ২১৯নং কক্ষে নাবিলা নামে এক শিক্ষার্থীর বোনকে (বহিরাগত ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী) টাকার বিনিময়ে রাখতেন। অন্য নেত্রীরাও টাকার বিনিময়ে হলে বহিরাগত শিক্ষার্থী রাখেন। এ নিয়ে শুক্রবার রাতে রূপার অনুসারীদের সঙ্গে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আনজুমান আরা অনুর অনুসারীদের কথা কাটাকাটি হয়।পরে শনিবার সকালে প্রথমে অনুর অনুসারী ছাত্রলীগ সদস্য সাবিকুন্নাহার তামান্নাসহ কয়েকজন পাঁচতলা থেকে দোতলায় আসে রূপার অনুসারী নাবিলা ও তার বোনকে হল থেকে বের করে দেয়ার জন্য। এ সময় রূপার অনুসারীরা তামান্নার হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। এরপর অনুর অনুসারীরা নাবিলা ও তার বোনকে (বহিরাগত) মারধর করে। পরে আহত তামান্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংঘর্ষের পর ইডেন কলেজ কর্তৃপক্ষ নাবিলাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করলেও পরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া যুগান্তরকে বলেন, সকালে আহতাবস্থায় ইডেন কলেজের ছাত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্নাকে হাসপাতালে আনা হয়। তার হাতে দায়ের কোপ লেগেছে। তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবা নাসরিন রূপা ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রূপা যুগান্তরকে বলেন, আমি এমন কোনো সমর্থক তৈরি করিনি যারা রুমে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করবে। আনজুম আরা অনুরা চায় না আমরা হলে থাকি, সে চায় না যে আমরা ক্যাম্পাসে থাকি। অনু রাত ১২টার পর মদ খেয়ে হলে ঢোকে এবং ইয়াবা ব্যবসা করে। এছাড়া বিসিএসসহ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করেছে সে। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছে।
তবে আনজুমান আরা অনু যুগান্তরকে বলেন, সংঘর্ষের সময় আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না। আমি পরে এসেছি। প্রমাণ চাইলে আপনি অধ্যক্ষ ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। অন্য নেত্রীরা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দিয়েছে সেগুলো ভিত্তিহীন। কোনো প্রমাণ নেই। তবে আমি বিবাহিত সেটা সত্য। মাদকাসক্তির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ৩ মাস পরপর রক্ত দান করি, চাইলে আমার মেডিকেল রিপোর্ট দেখতে পারেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শামসুন নাহারের সঙ্গে দেখা করলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।
লালবাগ থানার ওসি একেএম আশরাফ উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।