১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, সকাল ৭:৩৪
শিরোনাম :
শিরোনাম :
।। নিউইয়র্ক মুক্তধারা বইমেলা : বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা ।। ড. নূরুন নবীর পদত্যাগ এবং মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নীতিগত অবস্থান বিশ্বসভায় বাংলাদেশ ও বাঙালির জয়গান ইসিটি : ধর্মীয় ঐক্য, সামাজিক উন্নয়ন ও গবেষণার এক অনন্য যাত্রা ।। ইসিটি’তে ‘‘পবিত্র বাইবেল ও আইনের দৃষ্টিতে নির্যাতিতদের করণীয়’’ শীর্ষক আলোচনা সভা ।। ।। অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার ২০২৫ ।। বর্ণিল সাজে সেজে উঠেছে ডাইভার্সিটি প্লাজা নববর্ষের অনন্য স্মারক গ্রন্থ নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে সহস্রকণ্ঠে বিশ্ববাঙালির বর্ষবরণ বিশ্বকে অগ্রগামীকল্পে অনন্য ব্যক্তিত্ব ইলন মাস্ক ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে উঠবে—জননেতা আমিনুল হক সাব-অল্টার্ন তাত্ত্বিক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন ৮ ফেব্রুয়ারি
নোটিশ :
Wellcome to our website...

সংকটে মার্কেটিং-৮

রিপোর্টার
শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন


অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান

[সংকটকালে মার্কেটিং কেমন হবে, কিভাবে এই সময়ে টিকে থাকা যাবে এ নিয়ে একই শিরোনামে সাতটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই মেসেঞ্জারে ইনবক্স করে অথবা এসএমএস পাঠিয়ে জানিয়েছে, এগুলো কেবলমাত্র কোম্পানি এবং কর্পোরেট সেক্টরের লোকদের জন্য লিখা। যারা অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ছোট দোকানদার, মৌসুমী ব্যবসায়ী যেমন- ফলের মৌসুমী ফল, আলুর মৌসুমে আলু, কোরবানির সময় চামড়া, অথবা ছোটখাটো যখন যেটা সুযোগ টুকটাক ব্যবসা করে জীবন নির্বাহ করে তাঁরা বলেছে আগের লেখাগুলোতে তাঁদের জন্য কোন সুপারিশ নেই। সবকটা লেখাই লেখা হয়েছে বিবিএ এমবিএ পাস করা কর্পোরেট পিপলদের জন্য। যারা কখনো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মার্কেটিং পড়েনি বা বিবিএ-এমবিএ করেনি কিন্তু মার্কেটিং করে জীবিকা চালাচ্ছে তাদের জন্য সহজ করে কিছু লিখার জন্য অনুরোধ করেছে। তাদের অনুরোধ রাখতে গিয়ে এই নতুন সংস্করণ অর্থাৎ হালকা গল্পের মাধ্যমে মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ কনসেপ্টগুলো সুস্পষ্ট করাই আগামী কয়েকটি প্রবন্ধের লক্ষ্য]

(১) নীড(Need): দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যে বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন এবং সম্পর্ক টিকিয়ে রাখাই বাজারজাতকরণ। বিনিময় করতে গেলে কমপক্ষে দুটি পক্ষ থাকতে হয়। দুইজনেই কিছু একটার বিনিময়ে অন্য কিছু একটা গ্রহণ করে। বিনিময়ের আরেকটি শর্ত হচ্ছে এটি হতে হবে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে। দুই পক্ষের মধ্যে দেয়া-নেয়ার ঘটনা ঘটলেও সেটা বিনিময় নাও হতে পারে। যেমন- এক চাঁদাবাজ এক ব্যক্তিকে একটি থাপ্পর দিল আর ওই ব্যক্তিটি চাঁদাবাজকে ৫০০ টাকা দিল। এখানে বিনিময় হল, চাঁদাবাজ থাপ্পর দিল আর থাপ্পর খাওয়া ব্যক্তি ৫০০ টাকা দিল, এটা কোন বিনিময় না । কারণ এটা আপোষের মাধ্যমে হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে মানুষ যখন পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে পরস্পর কিছু একটা বিনিময়ের সুযোগ পায় তখন সে কি পেতে চায়?

*এক পন্ডিতমশাই দীর্ঘদিন যাবৎ পাঠশালায় তাঁর ছাত্রদেরকে বুঝালেন দুনিয়াতে জ্ঞানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। “জ্ঞানই আলো” , টাকা পয়সা কিছুই না; আজ আছে কাল নেই। জ্ঞান হচ্ছে অমূল্য সম্পদ। তোমরা কখনও টাকা পয়সার লোভ করবা না। জ্ঞানটাকেই আঁকড়ে ধরবে। ছাত্রদের মধ্যে ধারণাটি বদ্ধমূল করার জন্য পন্ডিত মশাই জিজ্ঞেস করলেন তোমরা বিষয়টা ভালোভাবে বুঝেছো তো? ছাত্ররা বলল বুঝেছি, “জ্ঞানই অমূল্য সম্পদ” । এর কিছুদিন পর পাঠশালায় ইন্সপেক্টর আসলো। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে গেলেন। বিভিন্ন প্রশ্ন করলেন ছাত্রদেরকে। এক ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের বিদ্যানুরাগ এবং বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা করার জন্য শেষ প্রশ্ন করলেন, “মনে করো তোমাদের সামনে দুইটি বস্তা আছে, এক বস্তায় প্রচুর টাকা আর এক বস্তায় জ্ঞান আছে , এর মধ্যে একটি বস্তা নিতে বললে তোমরা কোন`টা নিবে। প্রশ্ন শুনে ছাত্ররা হতচকিত হয়ে গেল। সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না কি বলবে, সবাই অনেকক্ষণ চুপ করে থাকল। হঠাৎ করেই পিছন থেকে এক ছাত্র বলে বসলো, “টাকার বস্তা নিব”। ইন্সপেক্টর চলে গেলেন। পণ্ডিতমশাই ছাত্রদের উপর অনেক রাগ করলেন। বললেন, “তোদেরকে আমি কত করে বুঝালাম, ‘টাকা আজ আছে কাল নেই। বিদ্যা অমূল্য সম্পদ, সব সময় বিদ্যাকে আঁকড়ে ধরবি। এত বুঝানোর পরও তোরা কি না উল্টোটাই করলি। আরে বোকার দল, আমাকে যদি কেউ এমন একটা সুযোগ দিত ‘এক বস্তা টাকা আর এক বস্তা বিদ্যার’ মধ্যে আমি কোন’টা নিব। অবশ্যই আমি বিদ্যা নিতাম।” তখন টাকার বস্তা নিতে চাওয়া ছাত্রটি দাঁড়িয়ে বলল “পণ্ডিতজি, যার যেটা কম আছে সে তো সেটাই নিবে।”

‘নীড’ এর কাছাকাছি বাংলা শব্দ হচ্ছে ‘তাড়না’। তাড়না যাদের বুঝতে অসুবিধা হয় তাঁদের জন্য আরেকটি কাছাকাছি শব্দ ‘যাতনা’। যাতনা কাকে বলে এটা বোধহয় সংজ্ঞা দেয়ার দরকার নেই। “জীবনে আমরা যত যাতনায় পড়েছি তাকে যাতনা বলে”। অতএব মানুষ যখন কোন কিছু পেতে চায়, যা দিয়ে তার যাতনা মিটবে সেটাই সে প্রথম চাইবে। এই করেনা সঙ্কটের কালে বিক্রেতাকে বুঝতে হবে মানুষ কি যাতনার মধ্যে আছে। সেই যাতনাটা ধরতে পারলেই এবং জুতসই একটি সমাধান দিতে পারলেই যাতনাটা মিটে যাবে। অতএব অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বলবো আপনার আশেপাশে থাকা লোকদের যাতনাটা বুঝার চেষ্টা করুন এবং তাঁর সমস্যাটা সমাধানের জন্য একটি পণ্য বা সেবা হাজির করুন । পণ্য বা সেবা হচ্ছে ভুক্তভোগীর সমস্যার একটি সমাধান।

(২) ঋণাত্মক চাহিদা (Negative Demand): কোন কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকেই চাহিদা বলে না । সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার সামর্থ্য থাকতে হবে, অর্থাৎ মানুষ কিছু একটা পেতে চায় এবং এর জন্য তাঁর সামর্থ্য আছে এবং সেই সামর্থ্য (টাকা) ব্যয় করার ইচ্ছা আছে তখনই সেই পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে চাহিদা বলা হবে। নেগেটিভ চাহিদা হচ্ছে চাহিদার সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা। চাহিদা পূরণের জন্য কোন কিছু পেতে যেখানে ব্যক্তি টাকা খরচ করতে রাজি আছে এর বিপরীতে নেগেটিভ চাহিদা হচ্ছে ব্যক্তি কোন কিছুর জন্য টাকা খরচ করতে রাজি আছে, তবে সেটা পাওয়ার জন্য নয়, না পাওয়ার জন্য। অর্থাৎ পন্যটি যাতে তাকে না নিতে হয় সেজন্য কিছু টাকা খরচ করতে রাজি আছে।

* বাংলাদেশে অনেকগুলো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা এনজিও আছে যারা মাদকাসক্তদের নিয়ে কাজ করে। মাদকাসক্তি নির্মূল করাই তাদের লক্ষ্য। মনে করুন আপনি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মাঠ কর্মকর্তা হিসাবে চাকরি পেলেন। সেখানে আপনার কাজটা কি হবে? মাদকাসক্তদের এই আসক্তি দূর করতে হবে,

তবে এটা অবশ্যই আপনার আসল কাজ না। মাদকাসক্তকে মাদক ছাড়ানো তেমন কোনো কঠিন কাজও না। আবদ্ধ করে ৪০ দিন ঘরে কোয়ারেন্টাইন রাখা গেলে সে নিজেই মাদক ছেড়ে দিবে। প্রথম প্রথম বেশ হৈচৈ করবে এবং মনে হবে যে মাদক না পেলে এই বুঝি তার জীবন চলে যাবে, মরে যাবে, আসলে মরবে না। তাছাড়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে মাদকাসক্তদের মাদক ছাড়ানো তেমন কঠিন কিছু না। মাদক ছাড়াতে পারলেই সমস্যাটির সমাধান হবে না, যদি না তাকে একটি কাজ দিয়ে পুনর্বাসন না করা যায়। কোন কাজ না থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই সে আবার মাদক নিতে শুরু করবে। অতএব মাদক ছাড়ানোর পরে ওই ব্যক্তির জন্য একটা চাকরি জোগাড় করে দেয়া হবে আপনার চাকরির বড় চ্যালেঞ্জ। ধরা যাক প্রত্যেক মাসে আপনার দুইজন সাবেক মাদকাসক্ত ব্যক্তির চাকরির ব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে হয়। চলতি মাসে দুইজনকে আপনার চাকরি জোগাড় করে দিতে হবে। আপনার মামার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি আছে। এই মাসের জন্য ভাগে পাওয়া দুই সাবেক মাদকাসক্তকে নিয়ে আপনি গেলেন মালিবাগে অবস্থিত আপনার মামার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে। মামার গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকের চাহিদা প্রতিদিনই থাকে। অনেকেই অন্য গার্মেন্টসে চলে যায়, বেশি বেতনের আশায়। তাই প্রতিদিনই লোক নিতে হয়। গার্মেন্টস শ্রমিকের চাহিদা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে একটি নৈমিত্তিক ব্যাপার। টাকা দিয়ে শ্রমিকের শ্রম কেনে। আপনি মামাকে বললেন, “মামা তুমি তো রোজই লোক নাও আমার এই দুইজন সাবেক ড্রাগ আ্যডিক্টকে তোমার ফ্যাক্টরিতে কাজ দাও।” মামা চাকরি প্রার্থী দুই সাবেকের দিকে তাকিয়ে আপনাকে বলল, “ভাগিনা (অথবা ভাগিনি) ওরা এখানে বসুক, তুমি একটু আমার সাথে ভিতরে আসো”। মামা আপনাকে ভেতরের রুমে নিয়ে ড্রয়ার থেকে ১০ হাজার টাকা বের করে আপনার হাতে দিয়ে বলল,” শুনেছি তুমি নাকি চাকরির পাশাপাশি ইভিনিং এমবিএ করছো” ।আপনি বললেন, “জী মামা”। মামা জিজ্ঞেস করল, “তোমার টিউশন ফি কত?” আপনি বললেন, “মাসে ১০ হাজার টাকার মতো।” মামা বলল, “আজ এই ১০ হাজার টাকা নিয়ে যাও, প্রতিমাসে এসে এখান থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে যাবে, তবু তোমার এই এক্স-ড্রাগ অ্যাডিক অ্যাডিক্টদের আমার কারখানার দিকে এনো না।” মামা এক্সদের হাত থেকে বাঁচতে মাসে ১০ হাজার টাকা করে খরচ করতে রাজি আছে। এটাই নেগেটিভ ডিমান্ড।

জীবনে আপনাকে এমন পণ্যও বিক্রি করতে হতে পারে। আপনার পণ্য কেনা তো দূরের কথা আপনার পণ্য বা সেবা না পাওয়ার জন্য মানুষ টাকা খরচ করতে চাইবে। সাবেক মাদকাসক্তদের মত সাবেক স্বামী বা স্ত্রীকে বিয়ে করাতে গেলও আপনাকে একই অবস্থায় পড়তে হবে। অর্থাৎ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বর-কনের জন্য পাত্র-পাত্রী জোগাড় করা অত সহজ হবে না । চাকরির কাজে অভিজ্ঞতার অনেক দাম। অভিজ্ঞতা না থাকলে চাকরি হয় না। এন্ট্রি লেভেলের চাকরির জন্যেও চাকরিদাতারা অভিজ্ঞতা চেয়ে বসে। অনেকটা যেন অভিজ্ঞতা নিয়েই মানুষ জন্মায়। তবে বিয়ের বাজারে অভিজ্ঞতার দাম নেগেটিভ। স্বামী বা স্ত্রী হিসেবে দুই সংসারে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে এখানেও নেগেটিভ চাহিদার মোকাবেলা করতে হবে। আমি নিজেই একবার বিপদে পড়েছিলাম আমাদের এক বন্ধুকে নিয়ে । বন্ধুটি সুজন-সুদর্শন, ভালো চাকরি করে। কিন্তু দুইবার ডিভোর্স খাওয়া। আমরা কাছে থেকেই জানি দুই বারই আমাদের বন্ধুটির কোন দোষ ছিলনা । কপাল খারাপ, দুইবারই অনেক সুন্দরী দেখে বিয়ে করে। দুই বারই ছিল ঝামেলাযুক্ত সুন্দরী। বউদেরও তেমন কোন দোষ ছিলনা। দুই বউই চলে যায়। কিছুদিন পর আমরা বন্ধুরা তাকে তৃতীয়বার বিয়ে করানোর জন্য চেষ্টা শুরু করি। যে মেয়েকে প্রস্তাব দেই সেই মেয়েই চা-নাস্তা খাওয়ানোর পর বিদায় করে দেয় এই বলে, “আর কাজ পান না, যে ব্যাটার দুইবার বউ গেছে তাঁরে বাদ দিয়া কথা বলেন।” এক্স-হাজবেন্ড বা এক্স-ওয়াইফ সম্পর্কে বেশিরভাগ লোকরই ধারণা হচ্ছে, “এত ভাল হলে কি তিনি ডিভোর্স খেয়েছেন। নিশ্চয়ই কোনো দোষ ছিল।” সাধারণ ধারণা হচ্ছে , কোন দোষ না থাকলে কি বউ/স্বামী তাঁকে ছেড়েছে। আসলে কি তাই ? অনেকেরই ডিভোর্স হয়েছে কোন দোষ না করেও। বিভিন্ন কারণেই সেটা হতে পারে। আপাতত ভাগ্যে ছিল এটা বলাই ভালো। কিছুতেই আমাদের বন্ধুটির জন্য মেয়ে জোগাড় করতে পারছিলাম না। এক পর্যায়ে একটি মেয়েকে টার্গেট করে তাকে রাজি করানোর দায়িত্ব বন্ধুরা আমাকে দিল। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একই কথা শুনতে হলো, “যেই ব্যাটার দুইবার বউ গেছে তাকে কে বিয়ে করে।” আমি আস্তে আস্তে মেয়েটিকে বুঝলাম, “তোমার কথা ধরে নিলাম ছেলেটি দোষ ছিল, তাহলেতো স্বামী হিসাবে সেই সবচেয়ে ভালো স্বামী হবে । আগের বউ চলে গেছে যে কারণে নতুন সংসারে সে আর এই দোষের কাজগুলো করবে না। স্বামী হিসেবে সে অনেক নরম(soft) হবে। কারণ সে ইতোমধ্যেই জেনে গেছে ‘দুইবার বউ চলে গেছে, এইবার বউ গেলে আর বউ পাওয়া যাবে না।” আমার এই কথাটা ভালোভাবে কাজ করেছে। কয়েকদিন বোঝানোর পর মেয়েটি রাজি হয়ে গেল। আমাদের বন্ধুর তৃতীয় বিয়ে হল। বিয়ের পর বন্ধুটি একেবারেই ঘরকুনো হয়ে গেল। দীর্ঘদিন তাকে কোথাও দেখা গেল না। বছর তিনেক পর একদিন হঠাৎ করে নিউমার্কেটে বন্ধুটির সাথে দেখা। সাথে ভাবি ও তাঁদের ছোট্ট একটি ফুটফুটে বাচ্চা। এটা-সেটা জিজ্ঞেস করে ভাবিকে কানেকানে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ ভাবি হাজবেন্ড কেমন?’ ভাবিও কানে কানে বলল, ঠিকই বলেছিলেন ভাই, “খুবই নরম”।

এক্স-ড্রাগ এডিক্টদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যেতে পারে। যেকোনো কারণে বা যেকোনো ভাবেই কেউ ড্রাগ নিলে সে একেবারে শেষ হয়ে গেছে এমনটি মনে করার কোন কারণ নেই । এক্স-ড্রাগ অ্যাডিক্টরা বরং কঠোর পরিশ্রমী হয় এবং কষ্টসহিষ্ণু হয়। অনেকেই পরবর্তী জীবনে ভালো কর্মী হয়। বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে সাবেকরা ভালোভাবে কাজ করছে। এ সকল কর্মীদের একটা তালিকা হাতে রাখলে গার্মেন্টস মালিকদেরকেও সাবেক মাদকাসক্তদের নিয়োগের জন্য রাজি করানো যাবে। নেগেটিভ ডিমান্ড মোকাবেলায় সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে ক্রেতার মনে বিষয়টি সম্পর্কে পূর্ব থেকেই যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে আছে তা দূর করা। তাঁর বদ্ধমূল ধারণা পরিবর্তন না করে এ ধরনের কোন কিছু বিক্রির করার চেষ্টা করলে সফল হওয়া যাবে না।…( চলবে)

( লেখক : উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং আহ্বায়ক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর