৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, সকাল ৬:১৪
নোটিশ :
Wellcome to our website...

রাসেল ভাইপার যত না মারাত্মক তার চেয়ে গুজব ও আতংক বেশি

রিপোর্টার
রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন

* মোঃ আব্দুল বাকী চৌধুরী নবাব ।।
(অ) আমরা বাঙ্গালী জাতির নানারকম কর্মকান্ডে অপসংস্কৃতির আড়ালে গুজব বেশ জায়গা জুড়ে আছে। বর্তমান অত্যাধুনিক যুগে এই গুজবের বেড়াজাল থেকে এখনও আমরা বেড়িয়ে আসতে পারেনি। এমনকি বর্তমানে এ সাপকে নিয়ে প্রায় জনপদে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। বস্তুত গুজবের কারণে যতখানি লাভ হয়, তার চেয়ে ক্ষতি হয় অনেকগুণ বেশি। এইতো বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক মাধ্যমে এই রকম একটি বীষধর সাপ রাসেলের ভাইপারের গুজবের শেষ নেই। তাই একান্ত বাধ্য হয়ে কাগজ কলম হাতে তুলে নিয়েছি।
উল্লেখ্য যে, চন্দ্রবোড়ার ইংরেজি নাম রাসেলস ভাইপার। এটি আমাদের উপমহাদেশে কম বেশি আগেও ছিল, এখনও আছে এবং আগামীতেও থাকবে। আর এই চন্দ্রবোড়ার নাম রাসেলের ভাইপার , যা পরিবারের অন্তর্ভূক্ত। মজার ব্যাপার হলো যে আগে এর নাম রাসেলের ভাইপার ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য যে, ১৭৯৭ সালের দিকে জর্জ শ এবং ফ্রেডেরিক পলিডোর নোডার নানা সাপ নিয়ে গবেষণার করার প্রাক্কালে এই সাপ চিহ্নিত করেছিলেন। আর এক্ষেত্রে নামকরণের দিক দিয়ে প্যাট্রিক রাসেলের নামে নামকরণ করা হয়েছে। কেননা স্যার প্যাট্রিক রাসেল এই উপমহাদেশের সাপের শ্রেণিবিন্যাসের বা ক্যাটালগিংয়ের কাজ শুরু করেন ১৭০০ সালের শেষের দিক থেকে। এ ব্যাপারে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আর তিনি এ অঞ্চলের অনেক সাপের পরিচিতি এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছিলেন। তার মধ্যে চন্দ্রবোড়াও ছিল। তাই আঠারো শতকে সাপের চূড়ান্ত শ্রেণিবিন্যাসের সময় প্যাট্রিক রাসেলের নিঘুর্ম ও অক্লান্ত কার্যক্রমের সুবাদে সতীর্থ বিজ্ঞানীরা এগিয়ে আসেন এবং তাঁর নাম জুড়ে দেয় এই সাপটির সঙ্গে। আর সেই থেকে চন্দ্রবোড়া হয়ে উঠে রাসেলের ভাইপার।
অনেকে বলে থাকেন যে, এটা পৃথিবীর পঞ্চম বিষধর সাপ। কথাটা পুরাপুরি সঠিক নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষের মারাত্বকতার দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক রেটিংয়ের দিক দিয়ে এর অবস্থান আরও অনেক নিচে। এমন কি বিষধর প্রথম ৩০টি সাপের মধ্যেও এর স্থান নেই। উল্লেখ্য যে, গোখরা সাপ কামড়ালে চিকিৎসা না নিলে গড়ে ৮ ঘণ্টা পর, কেউটে সাপের ক্ষেত্রে গড়ে ১৮ ঘণ্টা পর ও চন্দ্রবোড়ার কামড়ের পর গড়ে ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন পরে রোগীর মৃত্যু হলেও হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, চন্দ্রবোড়া কামড়ালে রোগীর অন্য কোনো অসুস্থতা না থাকলে ৭২ ঘণ্টার আগে রোগী অতি সহজে মারা যায় না। বাংলাদেশে এই সাপের কামড়ের পর ১৫ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকার রেকর্ড পর্যন্তও আছে। আর রাসেলের ভাইপার কামড়ালে যা করণীয়। সেক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশ^স্ত করতে হবে যে সাপের কামড় মানেই মৃত্যু নয়। কামড়ানোর স্থান থেকে বীষ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। কামড়ানোর অব্যবহিত পর স্থির করতে হবে যে পায়ে কামড় দিলে বসে পড়তে হবে। হাত বা অন্য অংশে কামড় দিলে সে অংশ নড়ানো যাবে না। চিকিৎসক বা হাসপাতালে পৌছানোর আগে এই ব্যান্ডেজ কোন ভাবেই খোলা যাবে না। হাতে বা পায়ে চুড়ি, আংটি বা নুপূর বা আচ্ছাদিত পোশাক থাকলে খুলে নিতে হবে। আর আক্রান্ত ব্যক্তিকে কাত করে লম্বালম্বিভাবে শুইয়ে দিতে হবে।
(আ) রাসেলের ভাইপার সর্বোচ্চ দেহ ও লেজের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৫ ইঞ্চি। এই চন্দ্রবোড়ার মাথা চ্যাপ্টা, ত্রিভুজাকার এবং ঘাড় থেকে আলাদা। থুতু ভোঁতা, গোলাকার এবং উত্থিত। নাকের ছিদ্র বড়, প্রতিটির একটি বড়, একক অনুনাসিক স্কেলের মাঝখানে। অনুনাসিক স্কেলের নীচের প্রান্তটি নাসোরোস্ট্রাল স্কেলে স্পর্শ করে। এর সুপ্রানসাল স্কেল একটি শক্তিশালী অর্ধচন্দ্রাকার আকৃতি ধারণ করে এবং নাসালকে নাসোরোস্ট্রাল স্কেল থেকে পূর্বের দিকে আলাদা করে। রোস্ট্রাল স্কেল যেমন বিস্তৃত তেমনি এটি উচ্চ। মাথার মুকুট অনিয়মিত, দৃঢভাবে খণ্ডিত দাঁড়িপাল্লা দিয়ে আবৃত বলে প্রতীয়মান হয়। সুপ্রাওকুলার স্কেলগুলি সরু, একক এবং মাথা জুড়ে ছয় থেকে নয়টি দাঁড়িপাল্লার মতো চিহ্ন দ্বারা বিভক্ত। চোখ বড়, হলুদ বা সোনালি রং দিয়ে ঘেরা, এবং ১০-১৫টি বৃত্তাকার আঁশ দিয়ে ঘেরা। সাপের ১০-১২টি সুপারলাবিয়াল আছে , যার মধ্যে চতুর্থ এবং পঞ্চমটি উল্লেখযোগ্যভাবে বড়। আর তিন বা চার সারি সাবকোকুলার দ্বারা চোখ সুপ্রালাবিয়াল থেকে আলাদা।
(ই) রাসেলের ভাইপার ভারত, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল এবং পাকিস্তানে দেখা যায়। অবশ্য পূর্বে এই প্রজাতির জন্য নির্ধারিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি ভিন্ন প্রজাতির অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হতো, যা উধনড়রধ ংরধসবহংরং বলে অভিহিত ছিল। অনেকে আবার এই প্রজাতিকে লোকালি “ভারত” হিসাবে তালিকাভুক্ত করে থাকে। এই প্রজাতি পাঞ্জাবে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি গঙ্গা উপত্যকা, উত্তরবঙ্গ এবং আসামেও দেখা যায়। রাসেলের ভাইপার কোনো নির্দিষ্ট আবাসস্থলে সীমাবদ্ধ নয়। এই সাপ বেশিরভাগই খোলা, ঘাসযুক্ত বা ঝোপঝাড় বা বনবাদারে পাওয়া যায়। এতদ্বতীত বাগান ও কৃষি জমিতেও দেখা যায়। এটি সমভূমি, চরাঞ্চল, উপকূলীয় নি¤œভূমি এবং পাহাড়ী এলাকায় সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত বছরের প্রথম দিকে সঙ্গম করতে দেখা যায়, গর্ভাবস্থার সময়কাল ছয় মাসের বেশি। আর যৌন পরিপক্কতা হতে ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগে। এই সাপ একসঙ্গে নূন্যতম ১১টি বাচ্চার জন্ম দিয়ে থাকে। রাসেলের ভাইপার ইঁদুর, টিকটিকি, সরীসৃপ, ভূমি কাঁকড়া, বিচ্ছু ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
(ঈ) সাধারণত কামড়ের সাথে সাথে ব্যাথা শুরু হয় এবং আক্রান্ত স্থান ফুলে যায়, রক্তপাতও হয়। এদিকে রক্তচাপ কমে যায়, হৃদস্পন্দন কমে যায়। এদিকে কামড়ের স্থানে ফোসকা দেখা দেয়। গুরুতর ক্ষেত্রে আক্রান্ত অঙ্গ বরাবর বিকাশ লাভ করে। সব ক্ষেত্রে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে বমি ও মুখের ফোলা দেখা যায়। কিডনি ব্যর্থতাও (রেনাল ফেইলিওর) লক্ষনীয়। গুরুতরভাবে ছড়িয়ে পড়া ইন্ট্রাভাসকুলার জমাটবদ্ধতাও মারাত্মক বিষক্রিয়ায় ঘটতে পারে। তীব্র ব্যথা ২-৪ সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। টিস্যু ক্ষতির স্তরের উপর নির্ভর করে এটি স্থানীয়ভাবে অব্যাহত থাকতে পারে। প্রায়শই, ৪৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে স্থানীয়ভাবে ফুলে ওঠে। পেশী টিস্যুতে লাল রক্তকণিকা এবং প্লাজমা ফুটো হওয়ার কারণে ফুলে যাওয়া জায়গা জুড়ে বিবর্ণতা ঘটতে পারে। আর দু সপ্তাহের মধ্যে সেপ্টিসেমিয়া বা কিডনি, শ্বাসযন্ত্র বা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে।
উ) রাসেল ভাইপারের আতংক নিয়ে সারা বাংলাদেশের লোক নির্ঘুম রাত দিন কাটাচ্ছে। আর সে ব্যাপারে বাস্তবে কতগুলো উদহারণ তুলে ধরছি। এতে অযথা আশংকা হয়তো তেমন আর থাকবে না।
ঘটনা এক- গত বছর ৩ জুলাই সোমবার সকালে পদ্মার চরে (রাজবাড়ী জেলার পাংশা সুর চরপাড় এলাকা) পাটখেতে নিড়ানি দিতে গিয়ে জাহিদুল (৩৫) সাপের কবলে পড়েন। তাঁকে চন্দ্রবোড়া কামড় দিলে সাপটিকে মেরে, মরা সাপসহ তাকে অন্য কোথাও না নিয়ে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্বজনেরা। কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে যান। অনেকে এই সাপটি রাসেল ভাইপার বলে অভিহিত করেন।
ঘটনা দুই- গত ৫ মার্চ মঙ্গলবার সকালে পদ্মায় মাছ ধরতে গিয়ে চন্দ্রবোড়ার ছোবলের শিকার হন তারিকুল ইসলাম (বাড়ি কল্যাণপুর, শিলাইদহ ইউনিয়ন, উপজেলা কুমারখালী)। তরিকুলের ডান পায়ে সাপ কামড় দিলে তিনি তাঁর সাথিদের বিষয়টি জানাতে একটু সময় নেন। বন্ধুরা আক্রান্ত স্থানে রশি দিয়ে বেঁধে দেন। তাঁদের ধারণা ছিল, এতেই কাজ হবে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় লোকজন তাঁকে তাঁর বাড়ি নিয়ে যান। এরপর পরিবারের লোকজন তাঁকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ততক্ষণে প্রায় সাত-আট ঘণ্টা সময় পার হয়ে গেছে। পরদিন বুধবার তাঁকে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনা তিন- একই জাতের সাপের কামড়ের দুইজন রোগী একই হাসপাতাল ভর্তি হয়। একজন সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরেন, আরেকজনকে বাঁচানো যায় না। আসলে সময় এখানে প্রধান বিষয় (ঞরসব রং ধ নরম ভধপঃড়ৎ) হিসেবে কাজ করেছে। প্রথমজন সাপে কাটার ১৯০ মিনিট অর্থাৎ ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিটের মধ্যে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে পেরেছেন। কিন্তু আরেকজন হাসপাতাল থেকে তুলনামূলকভাবে কম দূরত্বে থেকেও অবহেলা করে সময়মতো পৌঁছাতে পারেননি। বস্তুত সাপে কামড়ানোর চিকিৎসায় প্রথম ১০০ মিনিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের মধ্যে ১০টি অ্যান্টিভেনম নিতে হয়। এ প্রেক্ষাপটে একজন তরুণ চিকিৎসক তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি নিজে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ণি করার সময়ে কম করে হলেও চারজন চন্দ্রবোড়া কামড়ের রোগীকে সুস্থ করেছি।’ আসলে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নিয়ে অধিকাংশ রোগী ভাল হয়ে বাড়ীতে ফিরে গেছেন। সত্যি কথা বলতে কি, সাপের কামড়ে বেশি শিকার হন কৃষকরা চল এলাকায়। তাছাড়া বর্ষাকালে এই সময় সাপের উপদ্রব বেশি হয়ে থাকে।
(্ঊ) ইদানিং এমন অবস্থা দেখা গিয়েছে যে সাপ দেখলেই আর কথা নয়, মারতে হবে। গুজবের নামে এখন সব রকম মারার হিরিক চলছে। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (২০০৮-০৯) এবং দেশের প্রখ্যাত সর্প দংশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ মনে করেন, চন্দ্রবোড়া নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা দিতে পারলে বিষক্রিয়া থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব। উল্লেখ্য, অধ্যাপক ফয়েজ ১৯৭৮ সাল থেকে সর্প দংশনের ওপর গবেষণা করে আসছেন। তাঁর মতে, মানুষ এখনও কুসংস্কার কেটে উঠতে পারেনি। সাপে কামড়ালে আর কথা নয়, ওঝার কাছে ছুটে যায়। অহেতুক সময় নষ্ট করার কারণে তাই মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয় না।
পূর্বেই বলেছি, সাপ স্থুল ও সূক্ষ্মভাবে এই আজব প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। আমরা কেবল স্থুলটি দেখতে পারি। সূক্ষ্ম বিষয়টি আমাদের জানার বাইরে, যা কেবল প্রকৃতিই জানে। যাহোক, সাপ নিরীহ প্রাণী। আঘাত না করলে কামড় দেয় না। সাপ দেখলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ওদের সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে কিছুটা শব্দ করলে ওরা সরে যায়। একদিকে সাপ ইঁদুর খায়। আর ইঁদুর খাওয়ার কারণে ফসল রক্ষার পথ সুগম হয়। আবার কিছু সাপ অন্য সাপ খেয়ে পরিবেশ ঠিক রাখে। বর্তমানে দেশের কয়েকটি জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে সাপের চাষ হচ্ছে বিধায় সেখানে অনেক যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, সাপের বিষ অমূল্য সম্পদ। মাত্র এক আউন্স সাপের বিষের দাম কোটি টাকারও উপরে। আর সাপের চামড়া দিয়ে তৈরি হয় নানারকম মূল্যবান শৌখিন জিনিসপত্র। অথচ এই প্রাণীকে নির্মমভাবে হত্যা করার প্রবণতা মানব মনে মধ্যে গেরে বসেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো যে, একটিবারের জন্যও ভাবা হয় না যে সৃষ্টিকর্তার অনুপম সৃষ্টি এই প্রাণীটি। আমাদের জন্য কতই না উপকারী? এক্ষেত্রে একটি কথা না বললেই নয়, বিষধর সাপের সংখ্যা খুবই নগন্য বিধায় এদের এরিয়ে চলা তেমন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বর্তমানে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ তৈরিতে সাপের বিষ ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া সাপের বিষে নানা রকম জটিল রোগের প্রতিষেধক তৈরী হয়। সত্যিকথা বলতে কি, প্রতিবছর ফসলের জন্য ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ এবং মানুষের জন্য বিপজ্জনক বহুবিদ প্রাণী জীবন্ত খেয়ে সাপ অভূর্তপূব উপকার করে থাকে। এতদ্ব্যতীত দূর প্রাচ্যের দেশ সমূহে জীবন্ত সাপ রপ্তানী করা হয়। উল্লেখ্য যে, অধিকাংশ সাপের মাংসের রং সাদা এবং কোলেস্টরল মুক্ত বিধায় মনুষ্য স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী?
(ঋ) সাধারণত সাপ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে আঘাত না পেলে কামড়ায় না। তাই আমাদের বিষয়টি খেয়াল রেখে চলতে হবে। দুঃখের বিষয় হলো যে, রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে এতটাই মানুষ আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছে যে সাপ দেখা পেলে আর কথা নয় মারো, মেরে শেষ করে দেও। কিন্তু একটি খবর আমরা খুব কম মানুষই রাখি। এই সারা বিশে^ বীষধর সাপের সংখ্যা নেহায়েত অপ্রতুল, যা গণনার মধ্যে নয়। মজার ব্যাপার হলো যে, সাপের বিষ দিয়েই সাপে কাটা রোগী নিরাময় করা হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, সাপের বিষ সংগ্রহ করে ঘোড়ার গায়ে পুশ করা হয়। এতে ঘোড়া কিছুটা সময় অসুস্থ হলেও পরে ঠিক হয়ে যায়। আর ঐ বিষ ঘোড়ার শরীরে এন্টিবডি সৃষ্টি করে। আর এই এন্টিবডি সংগ্রহ করে অ্যান্টিভেনাম তৈরী পূর্বক সাপে কামড়ানোর রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

সহায়ক সূত্রাদি:
১। উইকিপিডিয়া
২। বাংলাপিডিয়া
৩। প্রথম আলো
৪। কালের কন্ঠ ৩০-১১-২০১৬
৫। যুগান্তর ২০-০৭-২০১৭
৬। বাংলাদেশ প্রতিদিন ২৫-০৬-২০২৪
৭। সমকাল ২৯-০৬-২০২৪
৮। ইত্যাদি।
বিশিষ্ট গবেষক, অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সম্মাননা ও পদকপ্রাপ্ত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর