জবি প্রতিনিধি :
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্ট ও সস্তা অনলাইনের তথাকথিত কয়েকজন সংবাদদাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের ব্যক্তিগত আলোচনায় উত্থাপিত বক্তব্য সংবাদ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সংবাদদাতাদের পরিচয় হলো এরা অধিকাংশই শিক্ষার্থী অথবা বহিরাগত। অথচ একজন রিপোর্টারের উপলব্ধিতে থাকা দরকার সে কোন্ বক্তব্য সংবাদে যুক্ত করবে আর কোনটি করবে না। এদিক থেকে কিছু সাংবাদদাতা উপাচার্যের বক্তব্যকে খণ্ডিত করে শিক্ষাবান্ধব প্রশাসককে হেয় প্রতিপন্ন করার পাঁয়তারা করছে। কোনো ঘটনার প্রকৃত সত্য তুলে না ধরে তা ‘টুইস্ট’ করে প্রচার করা যে অপরাধ সেটা তারা ভুলে গেছে।
১২ জুন প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, ইত্তেফাক প্রভৃতি পত্রিকায় উপাচার্যের যে বক্তব্য উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকশিত হয়েছে তা নির্ভেজাল মিথ্যাচারিতা। কারণ ‘ফকিন্নির পুত’ এ ধরনের শব্দ তিনি কখনো ব্যবহার করেননি। ‘ডাইকা আইনা’ শব্দও তাঁর নয়। অর্থাৎ যেসব শব্দ তিনি ব্যবহার করেননি সেসব শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করে হেয় করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনকে। সংবাদদাতা এতো কম বোধবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে যে কোন কথার কোন অর্থ, সে কথার কোনো দ্ব্যর্থ মানে আছে কিনা তা ভেবে দেখে নি।
সূত্র মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি পরিচিত একজন ছাত্রের সাথে উপাচার্যের দীর্ঘ প্রায় ৩০ মিনিটের ব্যক্তিগত আলাপচারিতার গোপনে রেকর্ডকৃত একটি খণ্ডিত অডিও ক্লিপ (কয়েক সেকেন্ড) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমে ভাইরাল করে এবং তা থেকে পরবর্তীতে দৈনিকে সংবাদ আকারে প্রকাশ করা সাংবাদিকতাসুলভ নয় এবং তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে সিনিয়র সাংবাদিকরা মনে করেন।তাছাড়া পত্রিকায় উপাচার্যের উদ্ধৃতি হিসেবে ব্যবহৃত বাক্যসমূহের বেশ কিছু শব্দ সংবাদদাতার বানানো। ওই শব্দগুলো এমনকি কয়েক সেকেন্ডের অডিও ক্লিপেও নেই ।
মনে রাখতে হবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান কেবল একজন ভাল শিক্ষকই নন তিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেধাবী গবেষক হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে তিনি ভাল সংগঠক ও জাতীয় দুর্যোগে সরকারকে দিক-নির্দেশনা দিতে সক্ষম। এদিক থেকে সৎ মানুষ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাঁর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক এবং মার্কেটিং সোসাইটির মতো বড় একটি সংগঠনের সভাপতি। তিনি বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং কোনো গঁৎ বাধা কথা বলেন না। তাঁর লেখা ও বক্তব্য সবসময়ই সুচিন্তিত অভিমতে পূর্ণ থাকে।
উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান গত সাড়ে ৭ বছর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও কাজের মাধ্যমে জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন নিবেদিতপ্রাণ প্রশাসক হিসেবে। এজন্য একটা ব্যক্তিগত আলাপচারিতা কী করে তথাকথিত সংবাদদাতা ‘টুইস্ট’ করে প্রচার করল এটাই বিস্ময়কর। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে।
তাছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সকলের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই রাষ্ট্রের কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের যতটুকু প্রাপ্য, তা আদায় করার সক্ষমতা এই উপাচার্যের আছে এটাও বিশ্বাস করতে হবে। যুক্তিবোধের কষ্টিপাথরে তাঁর বক্তব্যকে উপলব্ধি না করে খণ্ডিতাংশ কখনই পূর্ণ বক্তব্যকে প্রকাশ করে না। উপাচার্য সম্পর্কে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা কখনই সফল হবে না।
শেখ হাসিনা সরকারের আস্থাভাজন ড. মীজানুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনে এবং নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে যে পরিশ্রম করেছেন তা এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত সকলেরই আজীবন মনে থাকবে। তাছাড়া ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত প্রথম সমাবর্তন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকাশনায় তাঁর অবদান অগ্রগণ্যের। তিনি শিক্ষার্থীদের সংকট নিরসনে সর্বদা আন্তরিক এটাই এখন প্রচার হচ্ছে।
ইতোমধ্যে সকলে বুঝতে পেরেছে, একজন সম্মানিত ব্যক্তির ব্যক্তিগত আলাপচারিতাকে পুঁজি করে তাঁর চরিত্রহনন কখনই শোভনীয় হতে পারে না। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে বিষয়ে বিচার-আচারও নিন্দনীয়। উপাচার্যকে নিয়ে এই অশুভ চর্চা, এই অনৈতিক প্রচারণা কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে না। আজ অথবা কাল বা পরশু ওই তথাকথিত সংবাদদাতারাও এর শিকার হতে পারে। তখন হয়তো বর্তমান ভুক্তভোগী মানুষের জ্বালা একটু হলেও বুঝতে পারবে তারা।