৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, রাত ২:০৪
নোটিশ :
Wellcome to our website...

বিশ্বকে অগ্রগামীকল্পে অনন্য ব্যক্তিত্ব ইলন মাস্ক

রিপোর্টার
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন

* মোঃ আব্দুল বাকী চৌধুরী নবাব*
অ) বেশ কিছুকাল আগ থেকেই বিশ্বের শীর্ষ এক নম্বর ধনী ইলন মাস্ককে নিয়ে নানা আঙ্গিকে কথাবার্তা শুনছি। যাঁর প্রতি মিনিটে ইনকাম প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা। এর মধ্যে পত্র-পত্রিকায় দেখলাম ইলন মাস্ককে বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর জন্যে আহ্বান করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্ণমেন্ট এফিসিয়েন্সি এর প্রধান ও খ্যাতনামা প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু করার আহ্বান জানিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সঙ্গে তাঁকে বাংলাদেশে সফরেরও আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, সপ্তাহ খানেক আগে ইলন মাস্কের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর ভারচুয়াল বৈঠকে বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু নিয়ে কথাবার্তা হয়। এরপর গত বুধবার (২৬/০২/২০২৫) মাস্ককে একটি চিঠি লিখেন প্রধান উপদেষ্টা। এই চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, প্রথমে যখন আমিরাতে ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়। তখন পাশে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখনি স্টার লিংক বাংলাদেশে নিয়ে আসা সহ তাঁকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল। আর প্রধান উপদেষ্টা ঐ চিঠিতে আরও লিখেন যে দ্রুত বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু করা সহ তাঁর বাংলাদেশ সফরে আসার কথা। এ সূত্র ধরে তিনি স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের রূপান্তরমূলক প্রভাব, বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী যুবক, গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উচ্চগতির ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ কীভাবে বাংলাদেশের ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে পারে, সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষমতায়ন এবং দেশের লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে জাতীয় সীমানার বাইরে প্রবেশাধিকার দেওয়ার উপায় নিয়ে এ সময় আলোচনা করা হয়। ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি যুক্ত করা হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এতে বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একীভুত করা সম্ভব। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তিচালিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ড. ইউনূস আরও বলেন যে স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ফোনের একটি সম্প্রসারিত অংশ হতে পারে, যা গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আর এর ফলে তারা বৈশ্বিক উদ্যোক্তায় পরিণত হবে। এদিকে ইলন মাস্ক গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করে দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাবের কথা আগেই জানেন বলে উল্লেখ করেন। তাছাড়া ইলন মাস্ক বলেন যে, তিনি অনেক বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ পল্লী ফোন উভয়ের কাজের সঙ্গে পরিচিত। স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারে বলে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করেন। ড. ইউনূস স্টারলিংক সেবার সম্ভাব্য চালুর জন্য ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং জাতীয় উন্নয়নে এই উদ্যোগের তাৎপর্য তুলে ধরেন, যার প্রতি মাস্ক ইতিবাচক সাড়া দেন। এক্ষেত্রে মাস্ক বলেন, ‘আমি এটির জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’ বস্তুতঃ এই সম্পৃক্ততা বাংলাদেশে উন্নত স্যাটেলাইট সংযোগ আনা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং দেশজুড়ে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে ধারণা করা হচ্ছে। উভয় পক্ষ এই উদ্যোগে দ্রুত অগ্রগতি আনতে সম্মত হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে যাতে আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক সেবা চালু নিশ্চিত করা যায়, সেজন্য উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে ইলন মাস্কের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেচ এক্স এর সাথে নিবিড়ভাবে যোগাযোগের জন্যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আ) এবার আসুন ইলন রিভ মাস্ক সংক্ষেপে ইলন মাস্কের জীবনী সম্পর্কে সংগত কারণেই কিছুটা আলোচনা করা যাক। ইলন মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াতে ১৯৭১ সালের ২৮ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মা মেই মাস্ক, একজন মডেল এবং ডায়েটিশিয়ান। তিনি কানাডার সাসকাচোয়ানে, জন্মগ্রহণ করেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকাতে বড় হয়েছেন। এদিকে ইলন মাস্কের বাবা, ইরল মাস্ক হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার একজন তড়িৎ প্রকৌশলী, বৈমানিক, নাবিক, পরামর্শক এবং সম্পত্তি বিকাশকারী। তাঁর একটি ছোট ভাই, কিম্বল (জন্ম ১৯৭২) এবং একটি ছোট বোন, টসকা (জন্ম ১৯৭৪) আছে। তাঁর নানা জশুয়া হাল্ডম্যান একজন আমেরিকান বংশদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক। তাঁর দাদি ব্রিটিশ এবং ডাচ বংশোদ্ভুত। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, ১৯৮০ সালে মাস্কের বাবা ও মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পরে, তিনি বেশিরভাগ সময় তার পিতার সাথে প্রিটোরিয়া শহরে বাস করেন। অবশ্য বিবাহ বিচ্ছেদের দু’বছর পরে তিনি বাবার সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং পরে এই সিদ্ধান্তের জন্য আফসোস করেছিলেন। এসময়ে মাস্ক আর তাঁর বাবার মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছিল। উল্লেখ্য যে, শৈশবকাল হতে ইলন মাস্ক বই পড়তে ভালবাসতেন। দশ বছর বয়সে কমোডর ভিআইসি-২০ কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে কম্পিউটারের উপর তাঁর আগ্রহ জন্মে। আর তিনি একটি নির্দেশিকা ব্যবহার করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখেন। এদিকে মাত্র বার বছর বয়সে তিনি বেসিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে একটি ভিডিও গেম তৈরী করেন, যার নাম হলো ব্লাস্টার। মজার ব্যাপার হলো যে, এই বয়সে উক্ত গেমটি ৫০০ ডলারে তিনি পিসি এন্ড অফিস টেকনোলজি ম্যাগাজিনের কাছে বিক্রি করেন। জ্ঞানের প্রতি অতি আগ্রহের সূত্র ধরে ছোট থাকতেই ইলন মাস্ক আইজাক আসিমভের ফাউন্ডেশন সিরিজের বই পড়ে ফেলেন। আর সেখান থেকে তিনি শেখেন “সভ্যতার বিকাশে, অন্ধকার যুগের সম্ভাবনা ও স্থায়িত্বকাল কমানোর পদক্ষেপ। দুঃখের বিষয় হলো যে, মাস্ক শৈশবকালে প্রচন্ড উৎপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। এক্ষেত্রে একবার একদল ছেলে তাঁকে সিঁড়ি থেকে নিচে ফেলে দেয়। তখন তাঁকে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি করতে হয়েছিল। উল্লেখ্য যে, প্রিটোরিয়া বয়েজ হাই স্কুল থেকে পড়া শেষ করার আগে তিনি ওয়াটারক্লুফ হাউস প্রিপারেটরি স্কুল এবং ব্রায়স্টন হাই স্কুলে পড়েন। বস্তুতঃ মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বয়েজ হাই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তৎপর কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সহজতর হবে জেনে, মাস্ক কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত মায়ের মাধ্যমে কানাডার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। আর ভিসা প্রাপ্তির কাগজপত্রের জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় তিনি ছয় মাস প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছিলেন। ১৯৮৯ সালের জুন মাসে কানাডায় আসার পর মন্ট্রিয়লে তাঁর দাদার ভাইকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন; কিন্তু ব্যর্থ হন। এরপর তিনি সাসকাচোয়ানের পশ্চিমে তাঁর এক মাসতুতো ভাইয়ের কাছে চলে যান। তিনি এক বছর সেখানে ছিলেন এবং একটি খামারে ও কাঠের কারখানায় কাজ করেন। ১৯৯০ সালে মাস্ক কানাডার অন্টারিও রাজ্যের কিংস্টন শহরের কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। আর দুই বছর পর তিনি পেন্সিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত হন। ১৯৯৭ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্টন স্কুল থেকে অর্থনীতিতে এবং ইউপ্যান স্কুল অব আর্টস এন্ড সায়েন্স হতে পদার্থ বিজ্ঞানের উপর স্নাতক সম্পন্ন করেন। ইতোমধ্যে ইলন মাস্ক, তাঁর ভাই কিম্বল এবং গ্রেগ কৌরি এঞ্জেল ইনভেস্টরস এর তহবিল দিয়ে ওয়েব সফটওয়্যার সংস্থা জিপ ২ প্রতিষ্ঠা করেন। এ ব্যাপারে তাঁরা পালো অল্টোরে একটি ছোট ভাড়া অফিসে এই উদ্যোগটি নিয়েছিলেন। আর এখানে মানচিত্র, দিকনির্দেশ এবং হলুদ পৃষ্ঠাগুলি সহ সংবাদপত্র প্রকাশনা শিল্পের জন্য একটি ইন্টারনেট সিটি গাইড তৈরি পূর্বক বাজারজাত করেন। এক্ষেত্রে মাস্ক বলেন যে সংস্থাটি সফল হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কোন অ্যাপার্টমেন্টের থাকার খরচ বহন করতে পারতেন না বলে অফিসের খাটে ঘুমাতেন এবং ওয়াইএমসিএতে স্নান করতেন। আর ওয়েবসাইটটি শুধু দিনের বেলায় ছিল বলে রাতে সমস্ত সময় কোডিং করতেন। এর মধ্যে নিউইয়র্ক টাইমস এবং শিকাগো ট্রিবিউনের সাথে চুক্তি করেন। এর পর থেকে নানা আঙ্গিকে চড়াই উৎরাই পাড় হয়ে উদ্ভাবনীয় শক্তির আড়ালে এগিয়ে যেতে থাকেন। তখন থেকে তেমন পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে ইলন মাস্ক স্পেসএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা, সিইও, প্রধান ডিজাইনার; টেসলারের সিইও এবং পণ্য স্থপতি; এক্স (টুইটার) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা; দ্য বোরিং কোম্পানি এবং এক্স ডট কম (বর্তমানে পেপ্যাল) এর প্রতিষ্ঠাতা; নিউরালিংক, ওপেনএআই, এবং জিপ২ এর সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং সোলারসিটি এর চেয়ারম্যান। তাছাড়া অন্যান্য ছোট ছোট উদ্যোগী কর্মকান্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছেন।
ই) ইলন মাস্কের পেশাজীবনের দিক দিয়ে বলতে গেলে তিনি হলেন থ্রি ইন ওয়ান। কেননা তিনি সফল উদ্যোক্তা এবং একই সঙ্গে প্রকৌশলী ও আবিস্কারক। তিনি সাধারণ জীবন যাপন করেন। এতো বড় ধনী হওয়া সত্বেও তাঁর বাস করার জন্য কোন বড় প্যালেস বা আড়ম্বরপূর্ণ বাড়ী নেই। একান্ত সাধারণ বাসায় থাকেন। চলমান জীবনে তাঁর তিন জন জীবনসঙ্গীর সুবাদে ১২ জন সন্তান সন্ততির জনক। ইলন মাস্ক তাঁর সন্তানদের খুব আদর করেন। বাস্তবে দেখা গিয়েছে যে, বড় বড় অনুষ্ঠানে গেলেও ছোট বাচ্চারা তার সাথে থাকে। ইলন মাস্ক যে অতি সাধারণ পর্যায় থেকে বিশে^র এক নম্বর ধনী হয়েছেন এবং সাফল্যের চরম পর্যায়ে উন্নীত হয়েছেন। সেক্ষেত্রে তিনি ১০টি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, যেমন- ১) স্বর্ণের চেয়েও মূল্যবান সমালোচনা; ২) হার মানতে নেই; ৩) প্রচারের চেয়ে উন্নয়ন জরুরী; ৪) জীবন হোক রোমাঞ্চকর; ৫) পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই; ৬) ভালোবাসার ক্ষেত্রটিতেই কাজ করা ৭) ঝুঁকি নেয়া; ৮) হোমওয়ার্ক জরুরী; ৯) মরিয়া হয়ে লড়াই করা এবং ১০) জ্ঞানের জন্য পড়াশোনা করা।
সত্যি কথা বলতে কি, ইলন মাস্কের জীবনের প্রথম বেলা থেকে বর্তমানে আমরা যে ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে আছি। এই সময় পর্যন্ত তাঁর জীবনের সংঘটিত ঘটনা ও তাঁর কাজের ধারাবাহিকতা লিখতে গেলে কয়েকটি বড় বড় বই হয়ে যাবে। তাই ওদিকে না এগিয়ে প্রতিপাদ্য বিষয়ের স্বার্থে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা সমীচীন বলে মনে করি। এ সূত্র ধরে উল্লেখ্য যে, মোট কথা বর্তমানে ইলন মাস্ক খুবই প্রভাবশালী ব্যক্তি। কেননা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনেক ব্যাপারেই তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাই বাংলাদেশে ইলন মাস্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। হয়তো সম্মানিত পাঠকরা অবহিত আছেন যে, বাংলাদেশ বর্তমানে দেশি ও প্রতিবেশি দেশের ষড়যন্ত্রের কারণে নাজুক অবস্থায় আছে। তাই ইলন মাস্ক যদি স্টারলিংকের সুবাদে বাংলাদেশে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে পারেন তাহলে একঢিলে দুই পাখি মারা হবে। এর একটি হলো ডোনাল ট্রাম্প বাংলাদেশ নিয়ে বিরূপ কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। দুই হলো যে, প্রতিবেশি দেশ ভারতও সতর্ক থাকবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে হিসাব নিকাশ করে চলবে। পূর্বেই কিছুটা আলোকপাত করেছি যে, ষ্টারলিংকের মাধ্যমে ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সম্পর্ক আরও বেশি শক্ত হবে। এ প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যোগসূত্র সৃষ্টি হয়। মূলত এক্ষেত্রে প্রতীয়মান হয় যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সুদূর প্রসারী ষ্ট্রাটেজী আছে। কারণ বাংলাদেশ এই ভাবে দৃঢ় সম্পর্ক করলে আন্তর্জাতিক ভাবে বেকায়দায় পড়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। আর সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশে আমন্ত্রন পূর্বক ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ প্রেক্ষাপটে একটি কথা না বলে পারছি না। বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা নাজুক। কেননা চারদিকে কেমন যেন বিশ^ৃঙ্খলা, দাবী দাওয়ার অন্ত নেই। কেউ কারও কথা তেমন শুনতে চায় না। অবশ্য এর পেছনে আছে, দেশি বিদেশি সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র, যা আমরা তেমন বুঝি না। এটি সত্য যে, বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা সাধারণ মানুষ নয়, আমরা যা দেখতে বা বুঝতে পারি না। ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিন্তু ঠিকই বুঝেন। তাই ষ্টার লিংক এদেশে চালু করার পেছনে নানা ইতিবাচক নিয়ামক আছে, যা এখন না বুঝতে পারলেও পরে ঠিকই বুঝা যাবে। যাহোক, ইলন মাস্ক সর্বসময় ও সর্বকাজে পজিটিভ চিন্তা করে থাকেন। কোন কাজে হাত দিলে যতক্ষণ পর্যন্ত সফল না হন ততক্ষণ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেন না। বিভিন্ন আঙ্গিকে চেষ্টা করে যান। তাছাড়া কোন কাজে বা বিষয়ে কৃতকার্য হলেও আরও যাতে ভালো করা সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকেন।
পরিশেষে এই বলে ইতি টানছি যে, ইলন মাস্কের জীবন ও কর্মধারা থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।
সহায়ক সূত্রাদিঃ
১। উইকিপিডিয়া ২। ইন্টারনেট ৩। লেখকের অভিজ্ঞতা।
( লেখক- বিশিষ্ট গবেষক, অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সম্মাননা ও পদকপ্রাপ্ত।)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর