ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে আমরা মানব সমাজের শুরু থেকে তার যাবতীয় কর্মকাণ্ড, চিন্তা-চেতনা, ও জীবনযাত্রার অগ্রগতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারি। কেননা ইতিহাসের প্রথম উপজীব্য বিষয় হলো, মানব সমাজের অগ্রগতির ধারা বর্ণনা করা। সভ্যতার প্রধান স্তর, সভ্যতার সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের কথা সম্পর্কে ইতিহাস থেকে জানা যায়।
ইতিহাস আমাদের অতীত সম্পর্কে জ্ঞানদান করে। ইতিহাসের আলোকে আমরা বর্তমানকে বিচার করতে পারি। ইতিহাস পাঠ জাতীয় চেতনা উন্মেষের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। একটি জতির ঐতিহ্য ও অতীতের গৌরবান্বিত ইতিহাস ঐ জাতিকে বর্তমানের মর্যাদাপূর্ণ কর্মতৎপরতায় উদ্দীপিত করতে পারে। জাতীয় পরিচয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে জাতীয়তাবোধ গড়ে ওঠে যা দেশ ও সমাজের উন্নতি তথা দেশপ্রেমের জন্য একান্ত অপরিহার্য়।
ইতিহাস রচনা ও ইতিহাস চর্চা সম্পর্কে বিভন্ন দৃষ্ঠিভঙ্গি থাকতে পারে, কিন্তু ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কোন দ্বিমত নেই। রাষ্টনায়ক, রাজনীতিবিদ. বুদ্ধিজীবী, সামরিক ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের জন্য ইতিহাস খুবই মূল্যবান বিষয়। ঐতিহাসিক ঘটনার সঠিক আলোচনার জন্য বর্তমানে বিভন্ন জ্ঞানের শাখার সাহায্য গ্রহণ করতে হয়। ফলে ইতিহাস হয়ে ওঠে বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ।
সর্বোপরি ইতিহাস একটি জাতির ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক মূল্যকে যথাযথাভাবে সংরক্ষণ করে। সমাজ ও জাতির অগ্রগতির কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে ইতিহাস জ্ঞান সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস পাঠ চেতনাবোধ জাগ্রত করে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। আজ আত্নপরিচয়ের সংকটের লগ্নে ইতিহাস পাঠ আমাদের জাতীয় দায়িত্ব। কেননা ইতিহাস জ্ঞান আমাদের গর্বিত করে তুলতে পারে অতীত ঐতিহ্যের প্রতি। এর ফলে আমরা উদ্দিপিত হতে পারি। জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে ইতিহাস পাঠের বিকল্প নেই।
রুহুল আমিন
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়