। নিজস্ব সংবাদদাতা ।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য আয়োজিত চতুর্থ রেমিট্যান্স অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ও ২০ এপ্রিল। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মেলা উপলক্ষ্যে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজা ও সানাই রেস্তোরাঁ সেজে উঠেছে বর্ণিল সাজে। অতিথি ও দর্শনার্থীদের বরণ করে নিতে প্লেকার্ড-ফেস্টুন ও আলোকসজ্জায় এ দুটি স্থান হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর। উৎসবকে কেন্দ্র করে নিউইয়র্ক সিনেট একটি রেজুলেশন পাস করেছে। সিনেটর LIU (Senate Resolution No. 2025-J263) রেজুলেশনে বাংলাদেশিদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ফলে এবারের রেমিট্যান্স ফেয়ার অনন্য উচ্চতায় উপনীত হয়েছে। রেজুলেশনের একটি অংশ-‘‘WHEREAS, Bangladesh, a nation with a rich history and cultural heritage, is the seventh-largest recipient of remittances in the world, a testament to the strong global connections of its people; and WHEREAS, The United States of America, and in particular the Bengali-speaking diaspora residing in New York, play a pivotal role in this global network, contributing nearly $3 billion annually in remittances to Bangladesh; and WHEREAS, These remittances are a cornerstone of Bangladesh’s economy, bolstering foreign exchange reserves, supporting national income, and fostering economic stability in the current political and economic landscape; and…’’ পাশাপাশি বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার ২০২৫-এ আরো একটি কৃতিত্বের পালক যুক্ত হয়েছে। বিশ্বখ্যাত মাল্টিন্যাশনাল পেমেন্ট কার্ড সার্ভিস করপোরেশন পাওয়ার বাই হিসেবে যুক্তি সম্পাদন করে এই উৎসবে সংযুক্ত হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ-ইউএসএ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিইউসিসিআই) এবং ইউএসএ-বাংলা বিজনেস লিংকের যৌথ উদ্যোগে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সহযোগী সংগঠন হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। এবারের রেমিট্যান্স ফেয়ারের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— “বৈধ রেমিট্যান্স, উন্নত বাংলাদেশ।” এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ১৯ এপ্রিল নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন।
মেলায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানি, মানি ট্রান্সফার অপারেটর ও রেমিট্যান্স চ্যানেল পার্টনাররা অংশ নেবেন। তারা তাদের পণ্য ও সেবা তুলে ধরবেন, পাশাপাশি রেমিট্যান্স খাতের উন্নয়নের জন্য সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং নেটওয়ার্কিং ডিনারের আয়োজন করা হবে। মেলার অংশ হিসেবে একটি বিশেষ প্রকাশনা প্রকাশ করা হবে, যেখানে খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার এবং বিশেষজ্ঞরা রেমিট্যান্স ও অফশোর ব্যাংকিং নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী লেখা প্রকাশ করবেন।
মেলায় অংশগ্রহণকারী বিশেষ অতিথিদের মধ্যে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মনোয়ার উদ্দীন আহমেদ, এফবিসিসিআই-এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদসহ বাংলাদেশ এবং আমেরিকার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এবারের মেলায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে নিউইয়র্ক ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট এবং শীর্ষস্থানীয় মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন, যারা রেমিট্যান্স পাঠানোর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং উদ্ভাবনসমূহ তুলে ধরবেন।
এ বছরও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী এবং সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে থাকবেন সেরা ১০ বাংলাদেশি-আমেরিকান রেমিট্যান্স প্রেরক, বাংলাদেশের শীর্ষ তিন রেমিট্যান্স গ্রহণকারী ব্যাংক এবং শীর্ষ তিন মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বা রেমিট্যান্স চ্যানেল পার্টনার।
মেলার মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়েছে দৈনিক বণিক বার্তা, অর্থনীতি বিষয়ক ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, সাপ্তাহিক ঠিকানা, একাত্তর টিভি ও নিউইয়র্ক ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল টিবিএন২৪। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে মেলা, যেখানে দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
এ আয়োজনের মাধ্যমে বৈধ রেমিট্যান্স ব্যবস্থার প্রচার ও প্রসার ঘটবে বলে আয়োজকরা আশাবাদী। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে এবারের রেমিট্যান্স ফেয়ার আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।