১। সম্পর্ক ।।
সবকিছুই আজ গোলমেলে লাগে-
আদি ও আসল মনটাও।
কসমোপলিটন ট্রেড এন্ড কমার্সের যুগে ওটারই বাজার এখন চড়া।
যখন বুঝতে পারি-
বার বার খটকা লাগে-
জলের দামে বিকোইনি তো ফিতে দিয়ে মোড়ানো সবুজ পাতা!
আলতো ছোঁয়ায় মুছে গেছে কবে স্লেটে লেখা জোড়া দাসখত,
অযত্নেই পড়ে থাকে তাই ধুলোজমা লাল খেরোখাতা।
সবকিছুই আজ ধোঁয়াশা লাগে
চোখের সামনে যা কিছু দেখি সব-
পরখ করে দেখি বারবার তাই জংধরা ভোঁতা অনুভব।
২। হীরের মন ভাঙ্গে না ।।
তোমার মন তো কাঁচের নয়, হীরের-
এতোটুকু নাড়াচাড়ায় ভেঙ্গে যাবে কেনো!
না না সে ভেঙ্গে যাবার নয়-
টোকাটুকিতে চকচকে হয়,
হীরের মন,
শোনো, সোনার কন্যা।
৩। প্রেমিক অথবা সাহসী পুরুষ।।
নিভাঁজ শার্টে লেগে থাকা একগাছি চুলে- আমি বিব্রত হই না
শুভ্র পাঞ্জাবির আনাচে-কানাচে লিপস্টিকের ছিটেফোঁটা আঁচড় আমাকে মোটেও অপ্রস্তুত করে না
অমসৃণ চুড়ির কাটা দাগ বয়ে বেড়াতে অসংকোচ আমি-
বেয়াড়া পুরুষের অপবাদে মাথা কাটা যায় না আমার-
তবে কেনো বলো আমাদের অভিসার যাত্রায় তুমি পেতে দাও
তোমার লাজুকলতা?
দোহাই কন্যা, ভালোবাসার দামে তুলে নিও না যেনো মিছে লৌকিকতা।
৪। নিঃসঙ্গ বৃক্ষ।।
সবুজ বনানী ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে বৃক্ষটি, ছেড়ে এসেছে পরিজন ও গোত্র।
দিনে দিনে ক্ষীণকায় শরীরটি হয়ে উঠেছে তার পোক্ত তাগত।
তারপর –
কেটে গেছে অনেক বছর, অনেক কাল।
প্রাজ্ঞ ঋষির মতো ধ্যানমগ্ন বৃক্ষটি অবলোকন করে চলেছে চারপাশের যতো যা,
ভুলে যায় বহুকাল ধরে বুকের অন্দরে লুকিয়ে থাকা তার ক্ষত ঘা।
রোদে পুড়ে, জলে ভিজে তবু চোখে ভাসে তার সৌম্য কান্ত জীবনানন্দ।
কাটে না কভু তার আটপৌরে জীবনের মোহ!
এক পাওয়ালা ধ্যানী বকের মতো সতর্ক দৃষ্টি মেলে দেখেই যায়- বলে না কিছু,
পোয়াতি সময়ে অবনত মস্তক হয় আরো নিচু, আরো নিচু।
যখন উপচে পড়া যৌবন তার অকাতরে বিলিয়ে দেয় সুধা ভাণ্ডার,
রিক্ত যৌবনে যেনো সলাজ আত্মসমর্পণ।
এভাবেই কেটে যায় তার যুগ পরম্পরা।
এভাবেই একদিন বৃক্ষদেবীর যৌবনে নামে খরা।
তারপর ধীরে ধীরে একদিন ছায়ালোভী মায়ালোভীরা দূরে সরে যায়,
নিঃসঙ্গ বৃক্ষটি অপেক্ষা করে-
অনন্ত একদিন এসে নিয়ে যাবে তাকে দূর অজানায়!