৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, রাত ৪:৪০
নোটিশ :
Wellcome to our website...

শিক্ষক সংকটে মেডিকেল কলেজ

রিপোর্টার
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন

দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ৩৭টি মেডিকেল কলেজের বুনিয়াদি বিষয়ে পাঠদান চলছে অর্ধেকের কম শিক্ষক দিয়ে। চিকিৎসকরা এসব বিষয়ে পাঠদানে উৎসাহিত হচ্ছেন না। এ ব্যাপারে প্রণোদনা ঘোষণাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েও তেমন সাড়া নেই।

জনবল ঠিক না করে মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদন দেয়াকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে বুনিয়াদি আটটি বিষয়ে ৫২ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আটটি বুনিয়াদি বিষয়ে পড়ানোর জন্য অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারি অধ্যাপক মিলে ৮৯৫টি পদ আছে। অথচ এ সব বিষয়ে পাঠদান চলছে ৪২৭ জন শিক্ষক দিয়ে।

দীর্ঘদিন নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও শিক্ষক সংখ্যা বাড়াতে না পারায় বুনিয়াদি বিষয়ের বাইরে অন্য কোর্সগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে নতুন নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরেরে উপপরিচালক (মানব সম্পদ ব্যস্থাপনা বিভাগ) অধ্যাপক ডা. মাসুদ রহমান বলেন, ‘সারা দেশে পদের বিপরীতে অর্ধেকেরও কম শিক্ষক রয়েছেন। প্রতি বছরই বুনিয়াদি বিষয়ের ২৫ থেকে ৩০ জন করে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অবসরে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু এসব বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে চিকিৎসকরা আগ্রহী না হওয়ায় প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষক তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না।’

বুনিয়াদি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে চিকিৎসকরা আগ্রহী হচ্ছেন না কেন জানতে চাইলে মাসুদ রহমান বলেন, ‘বুনিয়াদি বিষয়ের চিকিৎসকরা নন-প্র্যাকটিসিং। কিন্তু ক্লিনিক্যাল বিষয়ের চিকিৎসকরা শিক্ষকতা ও প্র্যাকটিস দুটিই করতে পারেন। শুধু কনসালট্যান্টরা প্র্যাকটিস করতে পারেন। এ কারণে ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর দিকে চিকিৎসকদের নজর বেশি। সবাই কনসালট্যান্ট হতে চান। বেশ কয়েক বছর ধরে বুনিয়াদি বিষয়গুলোর ওপর চিকিৎসকদের আগ্রহ কমতে শুরু করেছে।’

সংকটের কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে অনেক ইনস্টিটিউট হয়েছে, তবে সেখানে জনবলের সংকট আছে। হাসপাতালগুলোতে সাড়ে ৮ হাজার চিকিৎসক যোগ দেবেন। শিক্ষক তৈরি বিষয়েও কাজ চলমান রয়েছে।’

চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেডিক্যাল শিক্ষক নিয়োগে না দেওয়া হলে পদ শূন্য থাকবে এটা স্বাভাবিক। বিসিএসের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া তৈরি হওয়ায় কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। যথাসময়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয় না। এতে প্রভাব পড়ছে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের উপর। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মেডিকেল শিক্ষাবিষয়ক প্রতিটি সভায় নীতিমালা মেনে চলার ওপর আমরা জোর দিই। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই।’

মুগদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. জামাল বলেন, ‘দীর্ঘ দিনের এ সংকট থেকে উত্তরণের একটাই পথ– নতুন শিক্ষক তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। তবে শিক্ষক একদিনে তৈরি করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় শিক্ষক তৈরির উদ্যোগ নিলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

‘যে হারে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই হারে শিক্ষক তৈরি হচ্ছে না। সরকারি মেডিক্যাল সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা। যে কারণে শিক্ষক সংকট রয়েই গেছে। আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে হয়তো এই সংকট থাকবে না। যে কারণে এখন থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর