২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, বিকাল ৩:৪৬
শিরোনাম :
শিরোনাম :
অমর একুশে বইমেলায় মনোয়ার মোকাররমের “আগামী বসন্তে” আজ বঙ্গবন্ধু গবেষক মিল্টন বিশ্বাসের জন্মদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় এপার-ওপার বাংলার লেখকগণ জবিতে ‘মধুসূদন ও বাংলা সাহিত্য’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত দীনেশচন্দ্র সেনের বৃহৎবঙ্গ, বাংলার লোককৃষ্টির যুক্ত সাধনার ঐতিহ্য আলোচনা সভার প্রধান আলোচক মিল্টন বিশ্বাস স্বর্ণপদক পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক নাসরীন জেবিন যারা কবিতা ভালোবাসে তারা স্বচ্ছ মানসিকতার হয় : কবি কামাল চৌধুরী ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সাংসদ মনোয়ার হোসেন চৌধুরীর শুভেচ্ছা বিনিময় ফাঁসিতলা ক্লাব ও পাঠাগারের প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত ‘‘সাহিত্যে দুই মহামানব : গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু’’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রটি অনুষ্ঠিত
নোটিশ :
Wellcome to our website...

মহাসমাবেশ : “অন্যায় যখন নিয়ম হয়ে ওঠে, প্রতিরোধ তখন কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়”

রিপোর্টার
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

সুইটি রাণী বণিক

আইনজীবী একটি স্বাধীন পেশা। যে ব্যক্তি ল’ পাস করবে সে আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করলো। ১৯৭১ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত  সনদ জমা নিয়ে  আইনজীবী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ল’ হল একটি কর্মমুখী শিক্ষা।  যেখানে বেকার থাকার কোন সুযোগ নাই।  পাস করার সাথে সাথে  আইনজীবী হিসাবে সনদ পাওয়ার অধিকার রাখে। অথচ বার কাউন্সিল এবং এর সাথে জড়িতরা  বিপরীত পথে হাঁটছেন।  শিক্ষানবিশ আইনজীবীদেরকে বার কাউন্সিল বেকারত্বের কারাগারে বন্দী করছে।

সমগ্র বিশ্বে একই নিয়ম, ল’ বিষয়ে গ্রাজুয়েশন  করার পর আইনজীবী হিসাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া বা সনদ দেওয়া। যা ট্রেড   লাইসেন্সের মত সরকারের ঘরে টাকা জমা দিয়ে আইনজীবী হিসাবে কাজ করা। এমর্মে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা বার কাউন্সিল কর্তৃক একটি খোলা চিঠি প্রেরণ করা  সত্বেও, কোন সাড়া মেলেনি!

আমি সকলের অবগতির জন্য চিঠিটি তুলে ধরছি…

‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এর কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন।

মহোদয় ,
অতীব বিনয়ের সাথে আপনাদের সদয় বিবেচনার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশের  শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণ সম্মিলিত ভাবে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, আমরা কেউ বিগত ১০ বছর, কেউ ৭ বছর আবার কেউ বা ৫ বছর যাবৎ শিক্ষানবিশ হিসেবে মহান আইন পেশায় আপনাদের অনুগত ও বাধ্যগত জুনিয়র হিসেবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বার এসোসিয়েশনে আপনাদের সাহচর্যে থেকে অত্যন্ত স্বল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেবা প্রদান করে আসছি।কিন্তু অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত চিত্তে আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, আমরা বাংলাদেশের শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণ এক চরম সংকটময় সময় অতিবাহিত  করছি। সারা পৃথিবীতে এই করোনা ভাইরাস নামক মহামারীর কারণে আমরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন না থাকায় আমরা বার কাউন্সিল কিংবা বার এসোসিয়েশন থেকে আর্থিক, মানসিক ও আইনগত  অধিকার থেকে  সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হয়ে আছি।

এই পরিস্থিতিতে আমরা দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বা অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনের কারণে বা অতিরিক্ত কঠোর পরীক্ষা পদ্ধতি চলমান থাকায় বা ৩/৪ বছর পর পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় জীবনের অনেক মূল্যবান সময় আইন পেশায় তালিকাভুক্তির পূর্বেই হারিয়ে ফেলেছি।

মহোদয়, মহামারীর কারণে বর্তমানে এক সংকটময় সময় আমরা অতিবাহিত করছি এবং এর সময়কাল আমাদের সকলেরই অজানা। সকল পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় জড়ো হলে তাদের থাকার জন্য কোন প্রকার বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না এবং এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সংশ্লিষ্ট সকলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
এমতাবস্থায় আমরা যারা কঠোর অধ্যবসয়ের মাধ্যমে কেউ ২০১৭ সালে আবার কেউ বা ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এম সি কিউ পরীক্ষায় তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাশ করেছি তাদের পরবর্তী লিখিত পরীক্ষা মহামারির কারণে মওকুফ করে শুধুমাত্র ভাইভা নিয়ে অথবা গেজেট করে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি।

বি:দ্র:  মহোদয়, বার কাউন্সিলের ইতিহাসে দেখা যায়, দেশের এক সংকটময় মুহূর্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বার কাউন্সিল তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে শিথিলতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমাদের প্রাণ প্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিথিলতা ও অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি মানবিক কারণে বিবেচনা করেছেন।

বিনীত নিবেদক

এম সি কিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

বাংলাদেশের সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবীবৃন্দ।’


দুঃখের  বিষয় এই আবেদনের পর মহাসমাবেশ গিয়েছে, কাফনের কাপড় পরেই শিক্ষানবীশ আইনজীবী‌দের!

১৯ জুলাই শিক্ষানবিশ আইনজীবী প্রিলিমিনারি পাশকৃতদের তালিকাভুক্তির দাবিতে মহাসমাবেশ হয়।মহাসমাবেশটি বেলা ২ টা থেকে রাজধানীর বাংলা মটরে বোরাক টাওয়ারে বার কাউন্সিলের সামনে চলে। ইতিমধ্যে সমাবেশের জন্য করোনা ঝুঁকি, প্রচণ্ড রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কাফনের কাপড় পরেই যোগ দিয়েছে দেশের ৬৪ জেলা থেকে ৮১ টি বারের শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত সমাবেশ স্থল। তারা বলছে- “আইনে কোন বাঁধা নাই গেজেট করে সনদ চাই”।

জানা জায়, প্রিলিমিনারি পাশকৃতদের ২০১৭ ও ২০২০ সালের রিটেন, ভাইভা পরীক্ষা চলমান বৈশ্বিক মহামারীর কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের ন্যায্য দাবি গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রধান সমন্বয়ক এ,কে মাহমুদ, সুমনা আক্তার লিলি ও আইনুল ইসলাম বিশালগণের ডাকে  ১৯ জুলাই রবিবার বার কাউন্সিলের সামনে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সনদের দাবিতে মহাসমাবেশ হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানা যায়।

শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের প্রধান সমন্বয়ক এ,কে মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণ এনরোলমেন্ট প্রক্রিয়ার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ২০১৭ সালের ২১ জুলাই এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তীর্ণ হই। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর বার কাউন্সিল কর্তৃক এনরোলমেন্ট পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে কোনো পরীক্ষা হয়নি। তবে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণ পরীক্ষার প্রিলিমিনারি সম্পন্ন হওয়ার পর বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লিখিত পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের বিষয় মানবিকভাবে বিবেচনা করে লিখিত পরীক্ষা মওকুফ করে অথবা লিখিত ও ভাইভা উভয় পরীক্ষা মওকুফ করে ২০১৭ ও ২০২০ সালে এমসিকিউ উত্তীর্ণদের গেজেট প্রকাশ করে সনদের প্রদানের জন্য দাবি জানাই।

ঢাকা বারের শিক্ষানবিশ আইনজীবী এবং আন্দোলনের সমন্বয়কদের অন্যতম সদস্য আইনুল ইসলাম বিশাল বলেন, The Bangladesh Legal Practitioners and Bar Council Order, 1972 এর Article 40 (1) এবং 40 (2) (m) অনুযায়ী গেজেট বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করতে কোনো বাধা নেই। উপরি-উক্ত দু’টি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে পারেন।

আন্দোলনের সমন্বয়কদের অন্যতম সদস্য আরেক জন সুমনা আক্তার লিলি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের ছাত্র ছিলেন, তিনি সারাজীবন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্তু আজ আমরা জাতির পিতার বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, তিন বছর একটি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছি।

তিনি আরও বলেন, বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটি যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো এনরোলমেন্ট পরীক্ষা পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেনি এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত সেহেতু ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণদের লিখিত ও ভাইভা মওকুফ করে গেজেট প্রকাশ করে ২০২০ সালেই সনদ প্রদান করা হোক। মুজিব শতবর্ষ থেকেই আপিল বিভাগের রায় কার্যকর করা হোক।

খুলনার শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোঃ রায়হান আলী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রিলি-পাশকৃতদের রিটেন, ভাইভা পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। আর কবে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এটা কেউ জানে না। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সম্মানিত বার কাউন্সিলের সদস্যদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাবো যেন বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রিলি পাশকৃতদের গেজেটের মাধ্যমে সনদ দিয়ে শিক্ষিত বেকারদের স্বনির্ভর করে তোলে।

উল্লেখ্য, এই শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা সারা দেশে গেজেটের মাধ্যমে সনদের দাবিতে একযোগে গত ৯ জুনে(২০২০) দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছিলেন। এছাড়া একই দাবিতে গত ৩০ জুন ঢাকা প্রেসক্লাবে প্রেস কনফারেন্স করেন ও সারাদেশে জেলা ভিত্তিক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর