মিল্টন বিশ্বাস
গত বছর(২০১৯) নভেম্বরে প্রকাশিত মৃণাল ঘোষের ‘নাজমা আক্তার-এর ছবি : মূর্তের অমূর্ত রূপ’ ২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলার মানসম্মত বই হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রকৃতির বিচিত্র রূপের সঙ্গে শিল্পীর দেখা তার রং-রস নিজের মনের মধ্যে নেওয়া, তার সৌন্দর্যকে অনুভব করা এবং দর্শকের চোখের সামনে সেগুলো তুলে আনা দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়া। প্রবৃত্তির অন্তর্গত রূপ, তার অভিব্যক্তি কবিতার মতো তুলে ধরা একজন শিল্পীর প্রধান কর্তব্য। শিল্পীর মগ্নতা ও সচেতন সংবেদনশীলতায় তৈরি হয় স্বপ্নময় পরিসর, যা আমাদের দৃষ্টিকে প্রসারিত করে, অনুভূতির জানালা খুলে দেয়। গভীরতায় নিমগ্ন হয় আনন্দ-বেদনা এবং ধীরে ধীরে আবিষ্কৃত হয় দৃশ্যমান শিল্প। শিল্পী নাজমা আক্তারের শিল্পকর্ম নিয়ে লিখিত ওপার বাংলার প্রখ্যাত শিল্প-সমালোচক মৃণাল ঘোষ রচিত ‘নাজমা আক্তার-এর মূর্তের অমূর্ত রূপ’ এই ধারায় এক অনন্য সংযোজন। যদিও বিমূর্ত ধারার ছবি আমাদের নয়। এই ধারাটি এসেছে পশ্চিম থেকে। কিন্তু শিল্পী নাজমা আক্তারের ছবিতে আমরা বাংলাদেশকে খুঁজে পাই। তাঁর ছবি যেন বাংলাদেশেরই রূপ, বাংলাদেশেরই রং।
শিল্প-সমালোচক মৃণাল ঘোষ শিল্পকলা বিষয়ে একজন লেখক ও গবেষক। থাকেন কলকাতায়। বাংলাদেশের বরিশালে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী দেশভাগের পর চলে যান কলকাতায়। শিল্পকলার ইতিহাস ও নান্দনিকতা নিয়ে দীর্ঘদিন লিখছেন। তাঁরই রচিত ‘নাজমা আক্তার-এর ছবি: মূর্তের বিমূর্ত রূপ’ শিল্প গবেষকদের জন্য একটি চমৎকার বই। মূলত মৃণাল ঘোষ এই বইয়ে মূর্ত ও বিমূর্ত রূপের সন্ধান করেছেন। নাজমা আক্তারের প্রতিটি ছবি বিশ্লেষণ করে মূর্ত-বিমূর্ত রূপের পরিচয় তুলে ধরেছেন।
নিয়মিত ছবি আঁকা সৃজনশিল্পীর কাছে ভ্রমণতুল্য এক অভিযান। শিল্পী নাজমা আক্তারের কাছে এই ভ্রমণ ঠিক নির্দিষ্ট গন্তব্যের যাত্রা নয়, বরং যাত্রাপথে নতুন কিছু সন্ধান কিংবা আবিষ্কারের চেষ্টা। শিল্পীর কাছে শিল্পসৃজন এক ধরনের গবেষণা। প্রতিনিয়ত নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে শিল্পীর নিজের সৃজনের স্বকীয় জায়গাটা বের করে নিতে হয়। এজন্য শিল্পী নাজমা আক্তারের চিত্রপটে অনেকগুলো বর্ণপর্দার আবির্ভাব ঘটে। একেকটি বর্ণপর্দার পরতে পরতে যে রং থাকে, তার কোনো কোনো অংশ ক্রমান্বয়ে স্বচ্ছ হয়ে চিত্রের উপরিভাগে উঠে আসে। ফলে নানা বর্ণপর্দার মিথষ্ক্রিয়ার দৃষ্টিনন্দন রূপ লাভ করে। সৃজন শিল্পীদের আলাদা একটি জগৎ থাকে। সেই জগৎটার নির্মাণ আর লালন পালন শিল্পীকে করতে হয়। না হলে অন্যের সঙ্গে নিজের ভুবনের কোনো ব্যবধান থাকে না। প্রকৃতিকে বিষয় করে ছবি আঁকেন না এমন শিল্পী বিরল, অন্তত সেটা বাংলাদেশে। এখানে একজনের কাজের ধরন ও কৌশলের সঙ্গে দৃশ্যত অন্যদের কিছু বিষয়ের সাদৃশ্য ঘটা বিচিত্র নয়। শিল্পী নাজমা আক্তার এ বিষয়ে সচেতন থেকেই দীর্ঘ কাল নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিজের এক চিত্রভাষা ও প্রকরণ নির্মাণ করেছেন।
চিত্রকলায় বিমূর্তকে আমরা নিরাবয়ব বলে থাকি। অর্থাৎ যে ছবিতে প্রকৃতির কোনো অবয়ব বা তার প্রতিরূপ সরাসরি চিত্রে নেওয়া যায় না। ছবিকে সাধারণত দুটি স্থূল বিভাজনে বিভাজিত করা যায়। মূর্ত বা বিমূর্ত যার অর্থ অবয়বী ও নিরাবয়ব। দ্বিমাত্রিক চিত্রপটে রং-এ রেখায় রূপের যে উপস্থাপনা ছবি বলতে আমরা সাধারণত তাকেই বুঝি।
ছবির যে আপাত মূর্ততা তা যেহেতু সব সময়ই এক ধরনের বিভ্রম, তাই প্রকৃত অর্থে সেই মূর্ততা স্পর্শযোগ্য প্রকৃত মূর্ততা নয়। এ অর্থে সব ছবিই সাধারণভাবে প্রত্যক্ষত মূর্ত নয় বা প্রত্যক্ষ বাস্তব নয়। তাই পরোক্ষভাবে সব ছবিতেই বিমূর্তার একটা মাত্রা থাকে। বাস্তব না হয়ে থাকে বাস্তবের বিভ্রম। তাই মূর্ত না হয়ে তা বিমূর্ত।
শিল্পী নাজমা আক্তারের ছবি নিয়ে মৃণাল ঘোষ রচিত ‘মূর্তের বিমূর্ত রূপ’ বইয়ে তিনি শিল্পকলার প্রখর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়েছেন। শিল্পবোদ্ধাদের শিল্পকে নতুন করে চিনতে সহায়তা করেছেন। একজন শিল্পীর শিল্পের জগত, তাঁর জীবন ও বাস্তবতা তুলে ধরেছেন অকপটে। শিল্পী নাজমা আক্তারের শিল্পের জগৎ বিস্তৃত। ছেলেবেলা প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা, গাছপালা, নদীজল, পশুপাখি সবকিছুর রসায়ন শিল্পীর মনকে প্রভাবিত করেছে। মৃণাল ঘোষের এই বই পড়ে আমরা সেই শিল্পসত্যকেই জানতে পারি। নাজমা আক্তারের প্রতিটি বিমূর্ত ছবি ব্যবচ্ছেদ করেছেন সমালোচক মৃণাল ঘোষ। প্রতিটি ছবিকে ভেঙে ভেঙে বিশ্লেষণ করেছেন। বিমূর্ত রূপটি তুলে ধরতে চেয়েছেন শিল্প বোদ্ধাদের কাছে। বইটির শুরুতেই : বনের মধ্যে একা; মেঘনার উপরে শরৎ, আদিবাসী যুবক, লুপ্তস্মৃতি, লাল ধূসর আর কালোর দিন- ছবিগুলো বিশ্লেষণ করেছেন; ছবিগুলোর বিমূর্ত রূপটি প্রকাশ করেছেন।
উপরন্তু‘মূর্তের বিমূর্ত রূপ’বইটিতে বিশ্লেষণের সুবিধার্থে সমালোচক মৃণাল ঘোষ বেশকিছু অধ্যায় বিভাজন করেছেন। সূচনা, প্রতিচ্ছায়াবাদ, বাংলাদেশের চিত্রচর্চা : আধুনিকতার বিবর্তন, বিমূর্তের বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধ, আর্ট কলেজসহ অনেকগুলো অধ্যায়ে বিভাজিত বইটিতে একজন শিল্পবোদ্ধার জ্ঞানতৃষ্ণা মিটবে। পরিচয় ঘটবে শিল্পের বহুমুখী শাখা-প্রশাখার সঙ্গে।
প্রতিচ্ছায়াবাদ বা ইম্প্রেশনিজম অধ্যায়ে আধুনিক চিত্রকলায় এর ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। গৌরীপ্রসাদ ঘোষ সম্পাদিত ‘এভরিম্যানস ডিকশনারি’তে ইম্প্রেশনিজম এর প্রতিশব্দ হিসেবে প্রতিচ্ছায়াবাদ ও প্রতীতিবাদ উল্লেখ করা হয়েছে। এ অধ্যায়ে লেখক প্রতিচ্ছায়াবাদ এর ঐতিহাসিক নিদর্শন ও চিত্রশিল্পে এর ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এখানে তিনি ক্যামিল কোরোট (১৭৯৬-১৮৭৫), জাঁ ফ্রাঁসোয়া মিলেট (১৮৪১-১৮৭৬), এডওয়ার্ড মানে (১৮২৩-১৮৮৪) এর ছবিতে প্রতিচ্ছায়াবাদের বর্ণনা করেছেন।
বাংলাদেশের শিল্পচর্চা : আধুনিকতার বিবর্তন অধ্যায়ে তিনি নাজমা আক্তারকে একজন ‘মানবী শিল্পী’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নাজমা বাংলাদেশের একজন মানবী শিল্পী। ‘মানবী’ কথাটিকে এখানে আমরা উপেক্ষা করছি না। শিল্প বিকাশে লিঙ্গগত কোনো বৈষম্য থাকা উচিত নয়।’(পৃষ্ঠা ২৮)
বাংলাদেশের শিল্প বিবর্তনের ধারায় নাজমা আক্তার কেবল একজন শিল্পীই নন। তিনি একজন লেখকও বটে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিনি এ বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। তাঁর যেমন একটি সমালোচনামূলক লেখা ‘বাংলাদেশের নারীদের সাম্প্রতিক চিত্রমেলা’ তাতে তিনি মানবী শিল্পীর অবস্থান সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন তা থেকে আমরা এখানকার পরিস্থিতি অনুধাবন করতে পারি। মূলত এখানে তিনি বাংলাদেশের চিত্রকলার ইতিহাস তুলে এনেছেন- ব্রিটিশ শাসিত ভারত থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত। ব্যক্তি অবদানকেও তিনি সমানভাবে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
বিমূর্তের বিকাশ অধ্যায়ে সমালোচক মৃণাল ঘোষ বিমূর্তের বিকাশে ধারাবাহিক আলোচনা করে নাজমা আক্তারের ছবিতে বিমূর্তের সন্ধান চালিয়েছেন। প্রথমেই বিমূর্তের বিকাশে সৈয়দ হায়দার (১৯২২), নাসরিন মোহামোদি (১৯৩৭), মোহাম্মদ কিবরিয়ার কথা বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, অণু-পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত এ শরীর, তাদের কোনো স্পষ্ট মূর্ত রূপ নেই। আমাদের ভাবনার মধ্যেই আমাদের সত্তার পরিচয় বিধৃত থাকে। এ ভাবনা একেবারেই বিমূর্ত। মূর্ত-বিমূর্তের এ দ্বৈত কাজ করে আমাদের সমগ্রজীবন জুড়ে।
পরবর্তীকালে তিনি ধারাবাহিক আলোচনার মধ্যদিয়ে বিমূর্তের বিষয়টি পাঠকের সামনে পরিষ্কার করেছেন। নাজমা আক্তারের বন্দি দুই আত্মা, খেয়ালী রাত ছবিগুলো বিমূর্ত ধারার।
‘বহ্নিশিখা ও সৃষ্টির অঙ্কুর’ অধ্যায়ে শিল্পী নাজমা আক্তারের ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তাঁর জন্ম, শৈশব, পড়াশোনা, শিল্পী হিসেবে তার বিকাশ প্রসঙ্গে বিচিত্রভাব মৃণাল ঘোষের লেখায় কৌশলে উঠে এসেছে। মূলত একজন শিল্পীর জন্ম, বেড়ে ওঠা ও তাঁর পারিপার্শ্বিক পরিবেশ শিল্পী সত্তা গঠনে ভূমিকা রাখে। নাজমা আক্তারও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না।
মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ে শিল্পীর সে সময়কার অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। তখন শিল্পী ছিরেন কুমিল্লায় তাঁর নানা বাড়িতে। তাঁর বাবাকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানিরা। পরে অবশ্য তিনি পালিয়ে এসেছিলেন। ১৯৭১ সালের ৪ঠা মে তাঁরা চলে যান ত্রিপুরায়। এবং যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন। এ নিয়ে তিনি এঁকেছেন পোড়া পাহাড়, বন্ধ প্রভৃতি ছবি।
এরপরে আসে আর্ট কলেজ অধ্যায়। শিল্পী নাজমা আক্তারের আর্ট কলেজে পড়াকালীন জীবন, বিয়ে ও একান্ত ঘরোয়া কাহিনিতে পরিপূর্ণ এই অংশটুকু। এঁকেছেন ‘জানালায় অরণ্য’‘ফেব্রুয়ারি’।
‘নিজের ছবি : প্রারম্ভিক পর্যায়’ অংশে শিল্পীর চাকরি জীবন, প্রথম ছবি আঁকার প্রারম্ভিক পর্যায়। নাজমা আক্তারের প্রথম চাকরি হয় ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ড্রয়িং-এর শিক্ষক হিসেবে। এরপর ছবি নিয়ে চলে তাঁর নিজের পর্যবেক্ষণ। আঁকেন আর্ট কলেজ প্রাঙ্গণ, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, শীতের সকাল, প্রকৃতি, ক্যাফেতে প্রেমিকযুগল, তিনবোন, চাঁদের ঘাট, বিষণ্ণ, ক্লান্তি, মীরাসহ অসংখ্য চমৎকার ছবি। এই পর্যায়ে শিল্পীর আঁকা ছবিগুলো কিন্তু বিমূর্ত নয়। সবগুলোই মূর্ত ধারার।
‘শিল্প ভাবনা, জীবন ভাবনা’ অংশে নাজমা আক্তারের শিল্পী জীবনের নানা প্রতিকূলতার ঘটনা উঠে এসেছে। নানা বাঁধা-বিপত্তি নিয়ে তাঁকে সামনে এগিয়ে যেতে হয়েছে। এখান থেকেই মূলত তাঁর শিল্পের আলাদা একটি জগৎ গড়ে উঠেছে। বিমূর্ত ছবি নিয়ে তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনী হয় ২০০৬ সালে। নাসির আহমেদ তখন দৈনিক জনকণ্ঠে লেখেন- ‘সম্ভবত ১৯৮৩ সালে শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে তরুণ শিল্পীদের এক প্রদর্শনীতে শিল্পী নাজমা আক্তারের ছবির সঙ্গে প্রথম পরিচয়। ‘আমার পূজার ফুল’ নামের একটি শিল্পকর্ম আমাকে মুগ্ধ করেছে।’কবি নাসির আহমেদের এমন মন্তব্য সত্যি শিল্পীর জন্য এক পরম পাওয়া।
২০০৭-২০১০ সালের মধ্যে নাজমা আক্তারের ছবির বিবর্তনকাল বলা হয়। ২০০৭ সাল থেকে তাঁর ছবিতে মগ্ন চেতনার প্রাধান্য পেতে থাকে। এসময়ের একটি ছবি ‘অবচেতন’। এরপর ‘মনযন্ত্র’ ছবির কথা উল্লেখ কো যায়। ছবিগুলো অনেক কনসাস। ছবিগুলোতে প্রকৃতির অনুষঙ্গ নেই বললেই চলে। কিন্তু প্রতীকী সৌন্দর্যে এক গভীর ভাবনার দিকে চালিত হতে পারে দর্শক। এই সময়ের সব ছবিই বিমূর্ত ধারার। শূন্যতার আয়োজন, লুপ্ত স্মৃতি, ক্ষয়িষ্ণু বাসনা, পরিত্যক্ত শহরের কোন, লাল পাথর প্রভৃতি এ ধারার উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
নাজমা আক্তারের সাম্প্রতিক ছবি নিয়ে লেখক মৃণাল ঘোষের উক্তি প্রণিধানযোগ্য- ‘২০১১-এর পর নাজমার ছবি আঙ্গিকের দিক দিয়ে ক্রমশ যেন সংবৃতির দিকে গেছে। বিশদবর্জিত হয়েছে। ঘটনা বা প্রতীকের ঘনঘটা প্রকাশকে ভারাক্রান্ত করেনি।’
২০১১-২০১৫ সালের দিকে শিল্পীর আঁকা ছবিগুলো প্রায় সবই বিমূর্ত ধারার। মূলত পরিপক্ব হাতে আঁকা ছবিগুলোর মধ্যে জীবনের একটি গভীর বোধ কাজ করে। এ সময়ে এঁকেছেন- অদ্ভুত আঁধার এক, অতীত দিনের স্মৃতি, অন্ধগলি, অলস জানালা প্রভৃতি অসাধারণ সব ছবি।
আলোচনার শেষে এসে বলতে পারি শিল্প-সমালোচক মৃণাল ঘোষ নাজমা আক্তারের উপর লেখা ‘মূর্তের বিমূর্ত রূপ’ এক অনন্য গ্রন্থ। যাঁরা শিল্পকে ভালোবাসেন শিল্পের তত্ত্ব-উপাত্ত জানতে চান তাঁদের জন্য বইটি একটি উৎকৃষ্ট সংযোজন। এ বইয়ে শিল্পী নাজমা আক্তারকে ব্যক্তিগত জীবন-কাঠামোর ভেতর দিয়ে তাঁর শিল্প-কাঠামোর পরিসরে উপস্থাপন করা হয়েছে।গ্রন্থটি পাঠ করে আগ্রহী পাঠক মাত্রই শিল্প-জ্ঞানের তৃষ্ণা মিটাতে সক্ষম হবেন বলে আমি মনে করি। গ্রন্থটির বহুল প্রচার কাম্য।
(নাজমা আক্তার-এর ছবি : মূর্তের অমূর্ত রূপ, মৃণাল ঘোষ, ২০১৯, মেরিট ফেয়ার প্রকাশন, ঢাকা, মূল্য : ১৫০০টাকা)